জঙ্গি-সেনা সংঘর্ষ, নিহত কিশোরও

গত মাসেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান। বৃহস্পতিবারের কাশ্মীর তা সত্য হতে দেখল। সেনা-পুলিশ এবং রাজ্যবাসীর মধ্যে একটা সংঘাতের সম্পর্ক আগের গোটা বছর জুড়েই বারবার মাথা তুলেছে।

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩৩
Share:

লড়াই: বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের পুলওয়ামায়। ছবি: পিটিআই।

গত মাসেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান। বৃহস্পতিবারের কাশ্মীর তা সত্য হতে দেখল। সেনা-পুলিশ এবং রাজ্যবাসীর মধ্যে একটা সংঘাতের সম্পর্ক আগের গোটা বছর জুড়েই বারবার মাথা তুলেছে। ছররা-বৃষ্টিতে জখম হয়েছে উপত্যকার তরুণদের বড় অংশ। প্রাণ হারিয়েছে একাধিক কিশোর। পুলওয়ামায় বৃহস্পতিবার সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আরও এক পনেরো বছরের কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নাম, আমির নাজির ওয়ানি। ওই সংঘর্যে মারা গিয়েছে দুই লস্কর জঙ্গিও। জাহাঙ্গির আহমদ গানি ও শফত শেরগুজরি। জাহাঙ্গির পুলওয়ামার কোয়ল গ্রামের ও শফত বন্দরপোরার বাসিন্দা। প্রশাসনের একাংশের আশঙ্কা— অশান্তির যে আঁচ ধিকিধিকি জ্বলছিল, মাঝে মাঝে পাথর ছুড়ছিল, এ দিনের পরে তা আবার বড় চেহারা নিতে পারে।

Advertisement

সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত কিছু দিন আগেই সতর্ক করেছিলেন, সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষের মধ্যে সাধারণ মানুষ যদি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন, তা হলে সেটা কড়া হাতে দমন করা হবে। এ দিন তা-ই হয়েছে। কাল রাতে পুলিশের কাছে খবর আসে, পদগামপোরার অবন্তীপোরায় লুকিয়ে রয়েছে কিছু জঙ্গি। রাত আড়াইটে নাগাদ অভিযানে নামে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যৌথ বাহিনী। তল্লাশির সময়ই জঙ্গিরা গুলি চালাতে শুরু করে। পাল্টা গুলি চালায় যৌথ বাহিনীও। সাত ঘণ্টা ধরে চলে গুলির লড়াই। তার মধ্যেই ঘটনাস্থলে জাহাঙ্গিরের পরিবারকে এনে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। মানেনি সে। তখন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তিনটি বাড়িই ধ্বংস করে বাহিনী। খতম হয় দুই জঙ্গিই।

কিন্তু এই সময়টা জুড়ে জঙ্গিদের পালাতে সাহায্য করার জন্য শয়ে শয়ে বিক্ষোভকারী পুলিশি ঘেরাটোপ ভাঙার চেষ্টা করতে থাকেন। পুলিশ ও আধাসেনা বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের বাগে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও গুলি ছোড়ে পুলিশ। এই বিক্ষোভ-গোলাগুলির মধ্যেই মৃত্যু হয় আমিরের। গুলিতে জখম হয় আট বিক্ষোভকারীও। বিক্ষোভকারীরা দক্ষিণ কাশ্মীরের ট্রেনলাইনে বা ট্রেনগুলিতে হামলা চালাতে পারে, এই আশঙ্কায় বানিহাল থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। উত্তর কাশ্মীরের বন্দিপোরাতেও এক সেনা চৌকিতে সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষে নিহত হয়েছে এক জঙ্গি। আহত দুই জওয়ান।

Advertisement

সংঘর্ষ চলাকালীনই ভারতীয় সেনার ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ কে ভাটিয়া পাকিস্তানের ডিজিএমও-কে ফোন করে নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাক-সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই অভিযোগ উড়িয়ে পাক সেনার মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর জানান, ভারতকে জানানো হয়েছে, তারা যেন নিজেদের অন্দরে নজর দেয় ও অভিযোগের সঙ্গে প্রমাণ পেশ করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন