এমএ-তে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েও ঘুম নেই নরেন্দ্র মোদীর চোখে। এ বারে তাঁকে সামাল দিতে হবে তাঁর নিজের বয়স-বিভ্রাট নিয়ে। খুঁজতে হবে বিএ-র সার্টিফিকেটও।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। অনেক কাঠখড় পোয়ানোর পর গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজেপেতে বের করে, নরেন্দ্র মোদী রাজনীতি বিজ্ঞানে এমএ পাশ করেছেন ফার্স্ট ক্লাস নিয়ে।
হাঁফ ছেড়ে দু-দণ্ড কোথায় জিরোবেন মোদী, তা নয়। এরই মধ্যে কংগ্রেস খপ করে ধরেছে। মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতে এমএ-র মার্কশিট না হয় পাওয়া গেল। বিএ-র সার্টিফিকেট কোথায়? যেটি না কি নরেন্দ্র মোদী করেছিলেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে! এমএ-তে ভর্তি হলে বিএ নিশ্চয়ই পাশ করে থাকবেন। কিন্তু মার্কশিট কোথায়? আর তার থেকেও বড় প্রশ্ন, গুজরাত কলেজের ভর্তির তালিকা থেকে দেখা যাচ্ছে, মোদীর জন্মদিন ১৯৪৯ সালের ২৯ অগস্ট। অথচ গোটা দুনিয়া জানে, মোদীর জন্মদিন ১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। তা হলে গলদ কোথায়? রহস্যটাই বা কী?
গুজরাতের কংগ্রেস নেতা শক্তিসিন গহিল আজই আমদাবাদে ঘটা করে এই প্রশ্ন তুলেছেন। মোদী যে এম এন কলেজে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন, সেখানকার নথি বের করে বয়সের তারতম্য নিয়ে হল্লা করেছেন। দলের হাইকম্যান্ডের নির্দেশে কাল আসছেন দিল্লি। এ বার দিল্লিতেও কাল থেকে মোদীর বয়সের ‘কারসাজি’ নিয়ে শোরগোল পাকাবেন তিনি। শক্তিসিন আজ বলেন, ‘‘আমরা নরেন্দ্র মোদীর বুকের ছাতি ৫৬ ইঞ্চি না তার চেয়ে কম-বেশি জানতে চাই না। আমরা জানতে চাই, মোদীর পাসপোর্টে তাঁর জন্মদিন কী দেওয়া রয়েছে? জানতে চাই তাঁর প্যান কার্ডে কী আছে? আর দু’রকম জন্মদিন দেওয়ার কারণ কী? আর এর সঙ্গেই জানতে চাই, নরেন্দ্র মোদী বিএ ডিগ্রি কোথা থেকে পেয়েছেন? এমএ করেছেন মানেই বিএ করেছেন, তার প্রমাণ কোথায়? বিএ করার সময় দশ জন সতীর্থর নাম বলুন প্রধানমন্ত্রী।’’
মোদী সরকারের মন্ত্রী মোখতার আব্বাস নকভি অবশ্য বলেন, ‘‘হেলিকপ্টার দুর্নীতিতে সনিয়া গাঁধীর দিকে অভিযোগের আঙুল উঠতেই এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছে কংগ্রেস। তাই আবোলতাবোল বিষয়ে যত নজর।’’ কিন্তু বাস্তব ঘটনা কতকটা তাই হলেও কংগ্রেস এখন ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। গুজরাতে কংগ্রেস বহু বছর ধরে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে নানা বিষয়ে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। কংগ্রেসের নেতারা চিল-চিৎকার করে মোদীর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ এনেছেন। কিন্তু মোদীর দাপটে কুল পাননি। এখন নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রে আসার পর কংগ্রেসের দিল্লি নেতারাও মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণের রসদ খুঁজে বেড়াচ্ছেন হন্যে হয়ে। শক্তিসিনদের তাই দিল্লি সফরের মাত্রাও বেড়ে গিয়েছে।
কপ্টার-দুর্নীতির আঁচ থেকে সনিয়া গাঁধীকে বাঁচাতে গুজরাতে মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় কে জি বেসিনের গ্যাস উত্তোলনে রাজকোষের ঘাটতির ইস্যুকে এখন সংসদে নিয়ে এসেছে কংগ্রেস। বুধবার কপ্টার নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনা হলে গ্যাস-দুর্নীতি নিয়েও মোদীকে বিঁধতে চায় কংগ্রেস। এর সঙ্গেই মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সের গরমিল নিয়েও রসদ হাতে রেখে মোদীকে চারপাশ দিয়ে ঘেরবার পাল্টা প্রস্তুতি নিচ্ছে সনিয়ার দল।