National News

হাসপাতালের লোভের শিকার, অকারণে জরায়ু খোয়ালেন ২,২০০ মহিলা

ফুলে ফেঁপে উঠতে হবে হাসপাতালের তহবিল। আর তাই চিকিত্সার নামে কোপ পড়ল অসহায় রোগীদের ঘাড়ে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৩:৩০
Share:

ফুলে ফেঁপে উঠতে হবে হাসপাতালের তহবিল। আর তাই চিকিত্সার নামে কোপ পড়ল অসহায় রোগীদের ঘাড়ে। কর্নাটকের গলিতে গলিতে গজিয়ে ওঠা চারটি হাসাপাতালে চলা ভয়ঙ্কর এই র‌্যাকেটের শিকার হয়ে জরায়ু খোয়াতে হল ২,২০০ জন আদিবাসী এবং দলিত মহিলাকে।

Advertisement

২০১৫ সালের অগাস্ট মাসেই এই র‌্যাকেটের কার্যকলাপ সামনে আসে। ওই বছরেরই অক্টোবর মাসে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটিও। এরপরও কিন্তু রমরমিয়ে চলছে ওই সব হাসপাতালের ব্যবসা। এই অভিযোগেই সোমবার জরায়ু খোয়ানো হাজার মহিলা কলাবুরাগি ডেপুটি কমিশনারের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের সঙ্গে ছিল বেঙ্গালুরুর কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। অল্টারনেট ল ফোরামের আইনজীবী বিনয় শ্রীনিবাস বলেন, ‘‘এই হাসপাতালগুলো শুধু যে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তাই নয়, ভারতীয় দণ্ডবিধি ও কর্নাটক মেডিক্যাল কাউন্সিল অ্যাক্ট অনুযায়ী এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সরকারের উচিত অবিলম্বে এই চারটি হাসপাতালের চিকিত্সকদের গ্রেফতার করা। সেই সঙ্গেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে চিরকালের মতো বন্ধ করে দেওয়া উচিত হাসপাতালগুলো। ২০০৭ সালের কর্নাটক প্রাইভেট মেডিক্যাল এসটাবলিশ অ্যাক্ট অনুযায়ীও এটা গুরুতর অপরাধ।’’

হাসপাতালের বিরুদ্ধে ফাইল করা স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এদের মধ্যে অধিকাংশ মহিলাই পেট ব্যথা, কোমরে ব্যথা ও শ্বেতস্রাবের মতো সাধারণ কিছু ছোটখাট সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। আল্ট্রাসাউন্ড করার পর তাঁদের অল্প কিছু দিনের জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। এর পরও সমস্যা না মিটলে ওই মহিলাদের বলা হয়েছিল যদি হিস্টারেকটমি(জরায়ু বাদ দেওয়ার অস্ত্রোপচার) না করা হয় তাহলে তাঁরা জরায়ুর ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারেন। আর কোনও রকম বিকল্প চিকিত্সার কথা এঁদের বলা হয়নি। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় তাঁরা অস্ত্রোপচার করাতে রাজি হয়ে যান।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে কিছু অসাধু এজেন্সির কথাও উঠে এসেছে। এরা আশা অঙ্গনওয়াড়ি ও এই জাতীয় সংস্থার কর্মীদের কমিশনের লোভ দেখিয়ে এই সব হাসপাতালে মহিলাদের পাঠাতে বলে। জরায়ু খোয়ানো অধিকাংশ মহিলাই যে শুধু গরিব তাই নন, এঁদের মধ্যে ৪০-৫০ শতাংশ মহিলার বয়স চল্লিশের নীচে।

বিনয় শ্রীবাস্তব আরও বলেন, ‘‘বাসব হাসপাতালের(অভিযুক্ত হাসপাতালগুলোর মধ্যে একটি) নথিকরণ করা হয়েছে এক সরকারি কর্মীর নামে। আইন অনুযায়ী কোনও সরকারি কর্মীর নামে এই ধরনের কোনও সংস্থা নথিভুক্ত করা যায় না। কেন এই হাসপাতালগুলো এখনও চলছে? কারণ, কলাবুরাগির মতো প্রত্যন্ত এলাকায় সরকারের নজর পড়ে না। যদি এই ঘটনা বেঙ্গালুরুতে ঘটত তাহলে সরকার নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হতো।’’

আরও পড়ুন: দু’মাসে ১১ জনের মৃত্যু, নগ্ন হয়ে বারান্দাতেই ঘুরছেন আবাসিকেরা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন