China

কয়েক মাস চিনের বন্দরে আটকে দু’টি ভারতীয় জাহাজ, সঙ্কটে ৩৯ নাবিক

ভারতের অভিযোগ, দু’দেশের সম্পর্কের উত্তেজনার কারণেই জাহাজ দু’টি আটকে রাখা হয়েছে। জবাবে চিনের অজুহাত, করোনার বিধিনিষেধ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:১১
Share:

এই এমভি জগ আনন্দই আটকে পড়েছে চিনের বন্দরে। —ফাইল চিত্র

একটি প্রায় ৬ মাস, অন্যটি ৩ মাসেরও বেশি। দু’টি ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজের ৩৯ জন কর্মী এই দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রয়েছেন চিনের বন্দরে। তাঁদের নীচে নামতেও দেওয়া হচ্ছে না, আবার জাহাজ ছাড়ার অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না। ফলে মহাসঙ্কটে পড়ে ভারত সরকারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। পূর্ব লাদাখ সীমান্তে দু’দেশের সম্পর্কের পারদ চড়ার কারণেই কয়েক মাস ধরে নাবিকদের এই পরিণতি বলে অভিযোগ তুলেছিল নয়াদিল্লি। তার জবাবে বেজিংয়ের অজুহাত, করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণেই এত সময় লাগছে।

Advertisement

অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা নিয়ে আসছিল ভারতীয় দু’টি জাহাজ এমভি জগ আনন্দ এবং এমভি অনস্তেশিয়ায়া। জগ আনন্দ ১৩ জুন চিনের জিংট্যাং বন্দরে নোঙর করে। তাতে ছিলেন ২৩ জন যাত্রী। অন্য দিকে অনস্তেশিয়া ২০ সেপ্টেম্বর ভিড়েছিল কাওফেইডিয়ান বন্দরে। সেই থেকে দু’টি জাহাজই মাল খালাসের অপেক্ষায় বন্দরে ঠায় দাঁড়িয়ে। চিনের তরফে পণ্য খালাসের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। বন্দরের ভাড়া গুণতে হচ্ছে। সঙ্গে কমতে শুরু করেছে ওষুধ ও খাদ্যপণ্যের ভাণ্ডার।

শেষ পর্যন্ত দু’টি জাহাজ কর্তৃপক্ষ ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কূটনৈতিক চ্যানেলে নড়াচড়া শুরু হলেও এখনও একটি জাহাজকেও পণ্য খালাসের অনুমোদন দেয়নি চিনের প্রশাসন। নয়াদিল্লির অভিযোগ, মে মাসে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-চিন সেনার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় সেনা সংঘর্ষের জেরেই এ ভাবে দীর্ঘদিন ধরে জাহাজ দু’টিকে আটকে রেখেছে চিন। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করেও তেমন অভিযোগ তুলছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছিলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি ওই দুই জাহাজের অনেক পরে বন্দরে নোঙর করেও পণ্য খালাস করে বন্দর ছেড়েছে। এর কারণ স্পষ্ট নয়।’’ অর্থাৎ অনুরাগও সীমান্ত উত্তেজনার দিকেই ইঙ্গিত করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাড়ি বিতর্কে চিঠি লিখে অমর্ত্যের পাশে দাঁড়ালেন ‘বোন এবং বন্ধু’ মমতা

শি চিনফিং সরকার অবশ্য পত্রপাঠ দিল্লির অভিযোগ খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছে। কারণ হিসেবে হাতিয়ার করেছে করোনাভাইরাসকে। চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন শুক্রবার বলেছেন, ‘‘আমি যতদূর বুঝি কোয়রান্টিনের নিময়কানুনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলেই জাহাজ দু’টির অবস্থান পরিবর্তন করতে দেবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এর সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনার কোনও সম্পর্ক নেই।

আরও পড়ুন: ‘সরকারি তহবিল’ পিএম কেয়ার্স, ফের বয়ান বদল কেন্দ্রের, আরটিআই-এ না

ওয়েনবিন অস্বীকার করলেও মাথায় রাখতে হবে গালওয়ানে সংঘর্ষের ঠিক দু’দিন আগেই চিনের বন্দরে ভিড়েছিল এমভি জগ আনন্দ। গালওয়ানের ওই সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই প্রাণহানির পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চরমে উঠেছিল। ফলে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আবার কোয়রান্টিনের নিয়ম মানতে ৬ মাস লেগে যাবে, এই তত্ত্ব বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয় না। ফলে ভারতের অভিযোগের সারবত্তা থাকলেও চিন তা স্বীকার করছে না। তবে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ওই চিনে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বেজিং প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন