শেষ লগ্নে আর শুধু শিবরাজে ভরসা রাখতে পারছে না বিজেপি। তাই মোদী আর মেরুকরণের অস্ত্রই ব্যবহারের দাওয়াই দিলেন সভাপতি অমিত শাহ।
কংগ্রেসের দাপটে এখন দলের সংগঠনই মধ্যপ্রদেশে তাঁদের বাঁচাতে পারে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই আজ সে রাজ্যের সব বুথের কর্মীদের দিল্লি থেকে ভিডিয়ো মারফত বার্তা দিলেন বিজেপি সভাপতি। বললেন, নরেন্দ্র মোদীকে ২০১৯ সালে ফের প্রধানমন্ত্রী করার লক্ষ্যেই মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা ভোট জিততে হবে। আর মোদী ফের প্রধানমন্ত্রী হলে গোটা দেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বের করতে যে ‘বড় অভিযান’ হবে, সেটাও এখন প্রচার করতে হবে। কারণ, অনুপ্রবেশকারীদের ভোটের দরকার নেই বিজেপির।
সুতরাং, অমিত শাহের বার্তা সাফ—মোদীর নামেই ভোট করতে হবে। আর গোটা দেশে নাগরিক পঞ্জির দাবি তুলে অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানোর মতো মেরুকরণের বিষয়ও তুলতে হবে। প্রশ্ন হল, ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের মধ্যে শুধু মধ্যপ্রদেশের বুথ কর্মীদের কেন বেছে নিতে হল অমিত শাহকে?
বিজেপি নেতারা বলছেন, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই সেখানে কংগ্রেস-বিজেপিতে। রাহুল গাঁধীর সক্রিয়তায় রাজ্য দখলও করে নিতে পারে কংগ্রেস। অভিযোগ উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান ১৫ বছর রাজ্য শাসন করে এখন ক্লান্ত। তার খেসারত দিতে হচ্ছে বিজেপিকে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লি থেকে বেনজির ভাবে ভিডিয়ো কনফারেন্স করে কর্মীদের চাঙ্গা করার দাওয়াই দিতে হল অমিত শাহকে।
তিনি বলেন, ‘‘শিবরাজ সিংহ চৌহান রাজ্যে উন্নয়ন করেছেন। এ বারে তাঁকে সমৃদ্ধ রাজ্য বানাতে হবে। নরেন্দ্র মোদীর হাত আছে শিবরাজজির উপরে। ভোটে জেতার মন্ত্রই হল বুথ আর কর্মী। সব ভোটারের কাছে পৌঁছতে হবে শিবরাজ আর মোদীর কাজের খতিয়ান নিয়ে। এই ভোট আর পাঁচটি ভোটের মতো নয়। এর পরেই লোকসভা নির্বাচন। সেখানে নরেন্দ্র মোদীকে ফিরিয়ে আনতে হবে। কংগ্রেসের মতো ৩০-৩৫ বছর ধরে পঞ্চায়েত থেকে সংসদে ক্ষমতায় থাকতে হবে। গন্তব্যে পৌঁছনো এখনও বাকি।’’
বিজেপিকে ‘অজেয়’ করতে রেকর্ড ব্যবধানে জেতার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি। সঙ্গে কর্মীদের হাতে তুলে দিয়েছেন দু’টি কর্মসূচি। প্রথমটি, এ মাসের ১৫ তারিখে প্রত্যেকের বাড়িতে বিজেপির পতাকা তুলতে হবে। লিখতে হবে, ‘মেরা ঘর, ভাজপা কা ঘর’। আর ২১ তারিখে ঘরে ঘরে ‘পদ্ম-দীপাবলি’ পালন করতে হবে। এই কর্মসূচিতে তাঁদের ঘরেও প্রদীপ জ্বালাতে হবে, যাঁরা শিবরাজ ও মোদী সরকারের প্রকল্পের সুফল পেয়েছেন। পাশাপাশি মেরুকরণে শান দিয়ে রাহুল গাঁধীকে কী ভাবে আক্রমণ করতে হবে, সেটাও আজ বলে দেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস নেতা মাওবাদীদের বিপ্লবী বলছেন। আবার অনুপ্রবেশকে মানবাধিকারের সঙ্গে জুড়ছেন। কংগ্রেস সভাপতি স্পষ্ট করুন— এই দুই বিষয়ে তিনি কোন দিকে আছেন।’’