দু’দিনের উত্তরপ্রদেশ সফর শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদী। এমন একটি এলাকা থেকে ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যা প্রবল ভাবে প্রত্যাখান করেছিল তাঁর দলকে। আজ সেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আজমগড়ে দাঁড়িয়ে তীব্র ভাবে কংগ্রেসকে আক্রমণ শানালেন মোদী। পরিকল্পিত ভাবে উস্কে দিলেন মেরুকরণের রাজনীতিও। ইঙ্গিত দিলেন, ক্ষমতা ধরে রাখতে লোকসভা ভোটের আগের ক’মাস মেরুকরণের রাজনীতিতেই ভরসা রাখতে চাইছেন মোদী, অমিত শাহরা।
গত বিধানসভা ভোটে গোটা রাজ্যে ভাল ফল করলেও, আজমগড় ও তারা লাগোয়া ১০টি বিধানসভার কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র একটিতে জিতেছিল বিজেপি। সেই আজমগড়েই প্রথম সভাটি করে ও একাধিক প্রকল্প উদ্বোধন করে মোদী আজ কার্যত লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করলেন। কংগ্রেসকে আক্রমণ করার পাশাপাশি চেষ্টা চালালেন হিন্দু ভোটকে একজোট করার। রাহুল গাঁধী যে ভাবে সক্রিয় রয়েছেন তাতে রীতিমতো অস্বস্তিতে রয়েছেন মোদী। সম্প্রতি মুসলিম বিশিষ্ট জনেদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাহুল। সেই সূত্র ধরেই মোদী বলেন, ‘‘কাগজে পড়লাম রাহুল বলেছেন কংগ্রেস নাকি মুসলিমদের দল। আমি এতে আদৌ অবাক হইনি। কিন্তু আমি যেটা জানতে চাই তা হল কংগ্রেস কি শুধুই মুসলিম পুরুষদের দল না কি মুসলিম মেয়েদেরও স্থান রয়েছে তাতে।’’
সংসদের গত অধিবেশনে তাৎক্ষণিক তিন তালাক বাতিলের প্রস্তাবটি লোকসভায় পাশ হলেও,
রাজ্যসভায় কংগ্রেসের অসহযোগিতার
কারণে আটকে যায়। সেই প্রসঙ্গ টেনে মোদী এ দিন বলেন, ‘‘তিন তালাকের প্রশ্নে কংগ্রেস-সহ বেশ কিছু দলের অবস্থান মুসলিম মহিলাদের প্রশ্নে তাদের আসল চেহারা স্পষ্ট করে দিয়েছে।’’ মোদীর লক্ষ্য স্পষ্ট। এক, কংগ্রেস ও মুসলিম সমাজের সম্পর্ক তুলে ধরে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ। দুই, তিন তালাকের প্রসঙ্গ টেনে মুসলিম মহিলাদের কংগ্রেসের ছাতার তলা থেকে সরিয়ে আনা।
উত্তরপ্রদেশে মোদী। আর গুজরাতে আজ কংগ্রেস তথা গাঁধী নেহরু পরিবারের বিরুদ্ধে সরব হন বিজেপি সভাপতি অমিত। গাঁধীনগরে কর্ণাবতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পরে যে দল ক্ষমতায় এসেছিল তারা ক্রমশ পরিবারতান্ত্রিক দলে পরিণত হয়েছে। যে দল সংগঠনে গণতন্ত্র ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়, তারা কখনও দেশের গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারে না।’’
অমিতের তোলা প্রশ্নে চুপ থাকলেও, রাহুলের বিরুদ্ধে মোদীর আক্রমণের জবাব দিতে আজ মুখে খোলে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। দলের পক্ষ থেকে টুইটে বলা হয়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে অনর্গল মিথ্যা বলে চলেছেন।’’ কংগ্রেসের প্রশ্ন, ‘‘আপনি কিসে ভয় পাচ্ছেন মোদীজি?’’