কার্তি চিদাম্বরম। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।
আইনক্স মিডিয়া দুর্নীতি মামলায় কার্তি চিদাম্বরমের সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ আরও তিন দিন বাড়ল।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি চেন্নাই বিমানবন্দরে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয় কার্তিকে। পিটার এবং ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের সংস্থা আইনক্স মিডিয়াকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কার্তির বিরুদ্ধে। তার পর থেকে পাঁচ তিন সিবিআই হেফাজতে ছিলেন তিনি। মঙ্গলবারই সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এ দিন দিল্লির পাটিয়ালা হাউস বিশেষ আদালতে কার্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করে সিবিআই। পাশাপাশি, কার্তির আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন জানান। তবে দুই পক্ষের দীর্ঘ শুনানির পর জামিনের আবেদন খারিজ করে কার্তিকে আরও তিন দিন, অর্থাৎ আগামী ৯ মার্চ পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে রাখার আবেদন মঞ্জুর করেন বিশেষ বিচারক সুনীল রানা।
আদালতে বিশেষ বিচারক সুনীল রানা জানিয়েছেন, গত চার দিনে এই মামলার তদন্তে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে। এবং এতে আরও তদন্তের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
আরও পড়ুন
আইসিআইসিআই এবং অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের দুই শীর্ষ কর্তাকে তলব
এ দিন আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটার দাবি, কার্তি চিদাম্বরমের বিরুদ্ধে ‘নতুন তথ্যপ্রমাণ’ মিলেছে। একটি সিল করা খামে ওই ‘তথ্যপ্রমাণ’ আদালতে পেশ করেন তিনি। সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি, “কার্তিকে হেফাজতে রাখার ফলে এই মামলায় যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। ওই নতুন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে কার্তিকে জেরা করার জন্য আরও ন’দিনের সিবিআই হেফাজতের প্রয়োজন।”
জেরার মুখে তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে কার্তির অসহযোগিতার অভিযোগ করে সিবিআই। কার্তি বরাবরই দাবি করে এসেছেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য তাঁকে টার্গেট করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবই, জিষ্ণু হচ্ছেন উপমুখ্যমন্ত্রী
আগের শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি ছিল, কার্তির অ্যাকাউন্ট্যান্টের কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক পরীক্ষা করে বেশ কতগুলি দলিল মিলেছে। তাতে অ্যাডভান্টেজ স্ট্র্যাটেজিক প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থার শেয়ার নিজের মেয়ের নামে হস্তান্তর করা হয়েছে। যদিও কার্তি বরাবরই দাবি করে এসেছেন, ওই সংস্থার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। তা ছাড়া, ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের জবানবন্দির পুরোটাই জমা দেওয়া হয় আদালতে। যাতে ইন্দ্রাণীর দাবি ছিল, বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্র জোগাড়ের জন্য তিনি এবং তাঁর স্বামী পিটার দু’জনেই তৎকালীন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের সঙ্গে দেখা করেন। সে সময় চিদাম্বরম জানিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে কার্তি এ বিষয়ে সাহায্য করতে পারবেন। সে সময় সাহায্যের বদলে ইন্দ্রাণীদের থেকে ১০ লক্ষ ডলার ঘুষ চান কার্তি। তবে ১০ লক্ষের বদলে কার্তির চারটি সংস্থাকে চার দফায় ৭ লক্ষ ডলার ঘুষ দেওয়া হয়েছিল।
এ দিনের শুনানিতে কার্তির আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি দাবি করেন, সিবিআই আসলে নিজেদের ‘তেষ্টা’ মেটাতে চাইছে। সিবিআই বার বার নতুন তথ্যপ্রমাণ আবিষ্কার করাটাই কার্তিকে হেফাজতে রাখা একমাত্র কারণ হতে পারে না। তাঁর মতে, “কার্তি কোনও সন্ত্রাসবাদী নন যে তাঁকে হেফাজতে রেখেই জেরা করতে হবে।” তবে সিবিআইয়ের পাল্টা দাবি, ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের বয়ান ছাড়াও কার্তির বিরুদ্ধে তাদের হাতে আরও অনেক তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। এবং ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের বয়ান ওই তথ্যপ্রমাণের অংশমাত্র।