প্রতিবাদ: গণপিটুনির বিরুদ্ধে স্লোগান কলকাতার মহাত্মা গাঁধী রোডে। বুধবার। ছবি: পিটিআই।
রাজস্থানের অলওয়ারে গরু পাচারকারী সন্দেহে এক যুবককে হত্যার পরপরই আবার গো-ঘাতক সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ উঠল গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশেই। দিল্লি থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে হাথরা জেলায় আজ সকালে চার জনকে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। ওই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, আজ সকালে একটি মৃত মোষ নিয়ে যাচ্ছিলেন চার জন। সে সময়ে তাঁদের উপরে চড়াও হয় এক দল গ্রামবাসী। তাদের অভিযোগ, ওই চার জন গরু চুরি করে বিষ দিয়ে মেরে ফেলেছে। এর পরেই শুরু হয় মারধর। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, এক জন বারবার জানান, এক ঠিকাদারের নির্দেশেই মরা মোষটিকে সৎকারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। তাঁদের কাছে মৃত প্রাণী সৎকারের ছাড়পত্রও ছিল। কিছুই শোনেনি স্বঘোষিত গোরক্ষক দল। চলে বেধড়ক মারধর।
অলওয়ারের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এ দিনের ঘটনার ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, স্বঘোষিত গোরক্ষকেরা ঘটনাস্থলে এক পুলিশ অফিসারের উপর হম্বিতম্বি করছে। কখনও বা আশপাশে জড়ো হওয়া জনতা জানতে চাইছে, অফিসার ওই চার জনকে হেফাজতে নেবেন কিনা! অফিসার নীরব। পরে পুলিশ ওই চার জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সিনিয়র পুলিশ অফিসার সিদ্ধার্থ বর্মা জানান, তারা মোষের মালিককে ডেকে পাঠিয়েছে। ওই চার জনের কাছে থাকা ছাড়পত্রটি খতিয়ে দেখা হবে। গণপিটুনিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
দেশ জুড়ে গোরক্ষকদের তাণ্ডবের প্রতিবাদে বিরোধী দলের নেতারা ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন। প্রতিবাদের অঙ্গ হিসাবে এবার উপহার পাওয়া গরু ফেরত পাঠালেন সমাজবাদী পার্টির নেতা আজ়ম খানের স্ত্রী তাজ়িম ফতিমা। সাংসদ ফতিমা এ দিন জানান, চারপাশে যা হচ্ছে, তাতে তিনি ভয় পাচ্ছেন। তাঁর আশঙ্কা, কেউ হয়তো গরুটিকে ইচ্ছাকৃত ভাবে মেরে তাঁদের ঘাড়েই দোষ চাপাবেন। গোবর্ধন পীঠের শঙ্করাচার্য খান পরিবারকে গরুটি উপহার দিয়েছিলেন। আগে একাধিক বার গোরক্ষা, গঙ্গা বাঁচাও-র মতো বিষয়ে সরব হয়েছেন ফতিমা। গোশালার জন্য ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে তিনি গোশালায় আর কখনও যাবেন না। আজমও মুসলিম দুধ বিক্রেতাদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, তাঁরা যেন গরুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যবসাগুলি থেকে সরে আসেন।