দিল্লিতে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের এক শাখায় ৪৪টি ভুয়ো খাতায় ১০০ কোটি

আমজনতা ব্যাঙ্ক-এটিএম-এ গিয়ে টাকা পাচ্ছেন না। আর কিছু ব্যাঙ্ককর্তার সঙ্গে যোগসাজশেই নতুন নোট চলে যাচ্ছে কালো টাকার কারবারিদের হাতে। মোটা টাকা ঘুষের বিনিময়ে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে কালো টাকার কারবারিদের বাতিল ৫০০-১০০০ টাকার নোট জমা পড়ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:০৯
Share:

আমজনতা ব্যাঙ্ক-এটিএম-এ গিয়ে টাকা পাচ্ছেন না। আর কিছু ব্যাঙ্ককর্তার সঙ্গে যোগসাজশেই নতুন নোট চলে যাচ্ছে কালো টাকার কারবারিদের হাতে। মোটা টাকা ঘুষের বিনিময়ে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে কালো টাকার কারবারিদের বাতিল ৫০০-১০০০ টাকার নোট জমা পড়ছে। দিল্লিতে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের এক শাখায় তল্লাশি চালিয়ে আজ ফের তার প্রমাণ মিলল। যেখানে ৪৪টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে ১০০ কোটি টাকা জমা পড়েছিল।

Advertisement

শুধু দিল্লিতে নয়, কলকাতাতেও এই অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের অফিসারদের সঙ্গে কালো টাকার কারবারিদের যোগসাজশ প্রকাশ্যে এসেছে ইতিমধ্যেই। কলকাতায় ৩ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। আজ দিল্লিতে ওই ব্যাঙ্কের চাঁদনি চক শাখায় আয়কর কর্তারা হানা দেন। তল্লাশিতে ধরা পড়ে, ওই শাখাতে ৪৫০ কোটি টাকার পুরনো নোট জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১০০ কোটি টাকা জমা পড়েছে ৪৪টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে। জাল পরিচয়পত্র দিয়ে এই অ্যাকাউন্টগুলি তৈরি হয়েছিল।

এর আগে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কেরই কাশ্মীরি গেট শাখার দুই ম্যানেজারকে ৩ কিলোগ্রাম সোনা-সহ গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই ব্যাঙ্ক থেকে তিন ব্যক্তিকে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার নতুন নোট-সহ গ্রেফতার করা হয়। তার পর ওই শাখার ৬ অফিসার-সহ মোট ১৯ জনকে সাসপেন্ড করা হয়।

Advertisement

অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের তরফে আজ বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, নিয়ম মেনে চলার ব্যপারে তারা পুরোপুরি দায়বদ্ধ। কোনও কর্মী এ থেকে বিচ্যুত হলে, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বেনিয়মের খোঁজে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এ পর্যন্ত ১০টি ব্যাঙ্কের ৫০ শাখায় অডিট চালিয়েছে। তাতেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের কিছু অফিসারের মাধ্যমেই কালো টাকার কারবারিরা ২০০০ টাকার নোট পাচ্ছে। আয়কর দফতর, সিবিআই অফিসাররাও মানছেন, ভূত রয়েছে সর্ষের মধ্যেই। সে কারণেই আজ থেকে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে নতুন করে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

আয়কর দফতর, সিবিআই ও ইডি-র অফিসারদের বক্তব্য, টাকা তোলার ক্ষেত্রে এখন ঊর্ধ্বসীমা রয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ছাড়া সরকারি বা বেসরকারি ব্যাঙ্কে পুরনো নোট বদল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই ব্যাঙ্কের অফিসারদের সঙ্গে যোগসাজশ ছাড়া কারও পক্ষে এত ২০০০ টাকার নোট জোগাড় করা সম্ভব নয়। এ কাজে জড়িয়ে ব্যাঙ্কের অফিসাররা ধরাও পড়ছেন। অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, এ পর্যন্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ২৭ জন অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ৬ জনকে কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি করা হয়েছে। সরকারি কর্তারাই মানছেন, ব্যাঙ্কের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার এই রাস্তা বন্ধ না করলে নোটের জোগান বাড়িয়েও মানুষের ভোগান্তি কমানো শক্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন