National News

বন্যার পরেই তীব্র দাবদাহ অসমে, গরমে মৃত ৫

আঞ্চলিক আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই মরশুমে অসমে ২৬ শতাংশ, মণিপুরে ৬৯ শতাংশ, মেঘালয়ে ৪২ শতাংশ, নাগাল্যান্ডে ৩৮ শতাংশ ও অরুণাচলে ৩২ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সদ্য বন্যা থেকে ওঠা মরিগাঁও জেলায় এখনও খরার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৮ ১২:০২
Share:

চিড়িয়াখানায় হাতি ফুলফুলিকে স্নান করাচ্ছেন কটন ও বি বরুয়া কলেজের ছাত্রীরা। ছবি: তেজস মারিস্বামী

সদ্য বানভাসি অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছে অসম। রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা জুড়ে চলা বন্যায় ৩২ জনের মৃত্যুও হয়েছিল। এখনও রাজ্যের দু’টি এলাকায় ব্রহ্মপুত্র ও ধনসিড়ি নদী বিপদসীমার উপরে বইছে। এই পরিস্থিতিতে মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশের খামখেয়ালিপনার জেরে রাজ্যে খরা সদৃশ পরিস্থিতি সৃষ্টি হল। গত কাল গুয়াহাটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রাছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন তাপমাত্রা গত কয়েকদিন ধরেই চলছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। গুয়াহাটিতে বর্ষাকালে এমন ভয়ঙ্কর দাবদাহ দেখা যায়নি। সেই সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি হওয়ায় অত্যধিক ঘাম হচ্ছে। এমনকি নজির ভেঙে শিলংয়েও তাপমাত্রও প্রায় ৩০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। অবশ্য গত রাতে এক পশলা বৃষ্টিতে খানিক স্বস্তি পেয়েছিলেন গুয়াহাটিবাসী। কিন্তু আজ সকাল থেকেই ফের রোদ চড়া।

Advertisement

আঞ্চলিক আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই মরশুমে অসমে ২৬ শতাংশ, মণিপুরে ৬৯ শতাংশ, মেঘালয়ে ৪২ শতাংশ, নাগাল্যান্ডে ৩৮ শতাংশ ও অরুণাচলে ৩২ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সদ্য বন্যা থেকে ওঠা মরিগাঁও জেলায় এখনও খরার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

রাজ্যে অসহ্য দাবদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলা লোডশেডিং মানুষকে আরও নাজেহাল করেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে চলছে বিক্ষোভ। প্রবল গরমের বলি হয়েছেন অন্তত পাঁচ জন। তাঁদের মধ্যে একজন রাজ্যপালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কনস্টেবল। পুলিশ জানায়, রাজ্যপালের কোকরাঝাড়-ধুবুড়ি সফরের জন্য নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য ছিলেন বদরসিংহ নার্জারি ও লালমোহন বর্মণ। শুক্রবার প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে থেকে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন দুই জন। তাঁদের কোকরাঝাড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বঙাইগাঁওয়ের বাসিন্দা বদরসিংহ হাসপাতালে মারা যান। লালমোহন ভর্তি আছেন। হোজাইয়ের মরিয়ম আজমল ওমেন আর্টস কলেজে ক্লাস চলাকালীন গরমে ২১ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। সকলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। করিমগঞ্জে গৌরীশ দাস নামে এক ব্যক্তি হিট স্ট্রোকে মারা যান। গুয়াহাটির মালিগাঁও চারিয়ালিতে অসহ্য গরমে রাস্তাতেই মৃত্যু হয় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। গোয়ালপাড়ার ধূপধারায় গরুদের জল খাওয়ানোর সময় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন প্রবীণকুমার রাভা নামে এক ব্যক্তি। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। অন্য দিকে শোণিতপুরের বালিপাড়ায় স্টেশনের কাছেই এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মৃতদেহ মেলে। দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল না। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা গরমের বলি হয়েছেন ওই ব্যক্তি। দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

বাঘের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে বাথটাবের। ছবি: তেজস মারিস্বামী

আরও পড়ুন: ফের সেই আলওয়ার, ফের পিটিয়ে মারল স্বঘোষিত গোরক্ষকরা

আরও পড়ুন: বেমক্কা ‘জাদু কি ঝাপ্পি’ রাহুলের, হতভম্ব মোদী

উজানি অসমে বাদলা ভিটা চা বাগানে গত কাল একটি চিতাবাঘ খাঁচাবন্দি হয়েছিল। কিন্তু খাঁচার মধ্যে জল না পেয়ে প্রবল গরমে তার মৃত্যু হয়। চিড়িয়াখানার ডিএফও তেজস মারিস্বামী জানান, অস্বাভাবিক গরমে প্রাণীদের, বিশেষ করে বাঘ-সহ বিড়াল জাতীয় প্রাণীদের অবস্থা কাহিল। তাঁদের প্রত্যেকের জন্য পাখা ও পর্যাপ্ত আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাঘেদের জল ছিটিয়ে স্নান করানো হচ্ছে। চিড়িয়াখানায় ফ্রিজার কেনা হয়েছে। বাঘেদের শীতল জমানো মাংস দেওয়া হবে। ভালুকদের জন্য ফোয়ারা ও বাঘের জন্য বাথটাবের ব্যবস্থা হয়েছে। চিড়িয়াখানার কর্মীদের পাশাপাশি প্রাণীদের যত্ন করতে হাত লাগিয়েছেন কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও। বিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পালা করে চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের স্নান করানো, খাওয়ানো-সহ বিভিন্ন কাজ দেওয়া হচ্ছে। দুই থেকে চার সপ্তাহ কাজ করার পরে তাঁদের শংসাপত্র দিচ্ছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement