শিবশঙ্কর গোস্বামী। —নিজস্ব চিত্র।
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ফুটে উঠল একটা পাখির ছবি। ছবির নীচে লেখা—এই পাখিটি ভারতের সব থেকে ছোট পাখি বলে চিহ্নিত। পাখিটির নাম কী? উত্তর দেওয়ার পরেই চলে আসছে পরের প্রশ্ন। আর একটি পাখির ছবি দেখিয়ে প্রশ্ন করা হল, এই পাখিটি খুব দ্রুত উড়তে পারে। পাখিটির নাম কী? তলায় কয়েকটি নামও দেওয়া হচ্ছে।
এ ভাবেই হোয়াটস্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের পাখি চেনাচ্ছেন হাজারিবাগের সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের বাঙালি শিক্ষক শিবশঙ্কর গোস্বামী। তাঁর নেশাই হল, পাখি। হাজারিবাগের জুলজুল পাহাড়, ছাড়ওয়া ড্যামে ঘুরে বেড়ান নতুন নতুন পাখির সন্ধানে। গলায় দূরবীণ ও ক্যামেরাকে সঙ্গী করে ছুটি পেলেই হাজারিবাগ ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন দেশের বিভিন্ন জঙ্গলে, পাখি দেখার নেশায়।
দেশি-বিদেশি পাখিদের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের পরিচয় করাতেই এবার শিবশঙ্করবাবু তৈরি করে ফেলেছেন ‘বার্ডস বাডি’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। এই গ্রুপেই চলে পাখি নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্নোত্তর, আলাপ-আলোচনা। লুপ্তপ্রায় পাখিদের বাঁচিয়ে রাখতে কী করণীয়, তা নিয়েও আলোচনা চলে এই গ্রুপে। তাঁর কথায়, “এখনও পর্যন্ত ২১২ জন সদস্য রয়েছে এই গ্রুপে। শুধু হাজারিবাগ নয়, বেঙ্গালুরু, মুম্বই, চণ্ডীগড়, আমদাবাদের পাখি বিষয়ে উৎসাহী প্রচুর মানুষ গ্রুপে যোগ দিয়েছেন।’’
আদতে ঝাড়গ্রামের ছেলে শিবশঙ্কর কর্মসূত্রে হাজারিবাগে। সম্প্রতি পক্ষীবিদ সালিম আলিকে নিয়ে একটি কুইজ অনুষ্ঠান করেছিলেন। প্রচুর সাড়া পেয়েছেন। পাখি নিয়ে এই ধরণের কুইজে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় পক্ষী বিষয়ক ‘পকেট বুক’।
এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের নেশা পেয়ে বসেছে রাঁচীর রিজিওনাল চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্ট মহেন্দ্র প্রসাদকেও। মহেন্দ্র বাবু বলেন, “আমি যখন হাজারিবাগে ছিলাম তখন থেকেই এই ছেলেটিকে চিনতাম। এরকম পাখি-পাগল ছেলে খুব কম দেখেছি। স্কুলের সময়টুকু বাদ দিয়ে ওর জীবনে শুধুই পাখি। আমিও গ্রুপের সদস্য।’’