রোশনলাল মাওয়া।
রোশনলাল মাওয়ার ফলের দোকানে বুধবার সকাল থেকেই উপচে পড়া ভিড়। ২৯ বছর বাদে ঘরে ফিরেছেন কাশ্মীরি পণ্ডিত রোশন। তাঁকে স্বাগত জানাতে জড়ো হয়েছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ‘‘এটাই হল কাশ্মীর। আমিও ব্যবসাদার। ওঁরাও। তবু কোনও প্রতিযোগিতা নেই। এই ভালবাসাই আমায় কাশ্মীরে ফিরিয়ে এনেছে’’, হাসিমুখে বললেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ।
জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ)-সহ অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের আক্রমণে নব্বই দশকের গোড়ায় উপত্যকা ছাড়ে কাশ্মীরি হিন্দু পণ্ডিত সম্প্রদায়। ১৯৯০ সালের ১৩ অক্টোবর অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকবাজেরা গুলি করে রোশনকেও। প্রাণে বাঁচলেও ব্যবসা বন্ধ করে পাততাড়ি গোটানো ছাড়া উপায় ছিল না তাঁর। কাশ্মীর ছেড়ে দিল্লিতে চলে যায় পরিবারটি। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেই সময়ে কাশ্মীর ছেড়েছিল ৬২ হাজার পরিবার।
বুধবার শ্রীনগরের জাইনা কাদাল এলাকায় নতুন দোকান খুলেছেন রোশন। শুকনো ফল, খেজুর ও মসলার ব্যবসা তাঁর। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে সেই ছবি। ছেলে সন্দীপ মাওয়া ও রোশনকে ঘিরে সকাল থেকেই অভিনন্দনের বন্যা। সাদা পাগড়ি পরে মাওয়াদের ঐতিহ্যবাদী প্রথায় তাঁদের স্বাগত জানান এলাকার মানুষ। বৃদ্ধের কথায়, ‘‘নিজের বাড়ির মতো জায়গা আর নেই। আমায় উপত্যকার মানুষ যে সম্মান দিয়েছে তার কোনও জবাব নেই। আমরা এক রক্তে অাবদ্ধ। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ফেরাতে চান উপত্যকাবাসী।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দিল্লিতে আমার বিরাট ব্যবসা। বাড়ি। কিন্তু কাশ্মীরের জন্য মন কাঁদছিল। এখানকার মানুষের ভালবাসা, সম্মান আমায় টানছিল।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তাঁর দাবি, বাকি পণ্ডিতদেরও ফেরার সময় এসেছে এ বার। ১৯৯০ সালটা তাঁদের জন্য খারাপ ছিল ঠিকই। হিন্দু পণ্ডিতরা যেমন আক্রান্ত হয়েছিলেন, তেমন মুসলিমরাও। তাঁরই মতো আরও ২০০ পণ্ডিতকে পরের মাসে ঘরে ফেরানোই এখন রোশনের লক্ষ্য।