যাচ্ছিলাম কুম্ভে, পৌঁছলাম হাসপাতাল

হাসপাতালে অবশ্য দ্রুত চিকিৎসা হল। বাবার স্ক্যান থেকে জানা গেল, মাথায় রক্তক্ষরণ রয়েছে। পিসির হাতে ব্যান্ডেজ হল।

Advertisement

অংশু মজুমদার, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটির যাত্রী

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:১১
Share:

দ্রুত বাড়ি ফিরতে চান অংশু।

খুব আনন্দে ছিলাম। বাবা অনুপ মজুমদার, পিসি তন্দ্রা মোহান্ত, দাদা অর্ঘ্যর সঙ্গে রাধিকাপুর-আনন্দবিহার সীমাঞ্চল এক্সপ্রেসে যাচ্ছিলাম কুম্ভমেলায়।

Advertisement

আমাদের বাড়ি বালুরঘাট। ট্রেনে উঠেছিলাম কালিয়াগঞ্জ থেকে। আমরা ছিলাম বি ৩ কামরায়। ভোর সাড়ে তিনটের সময় আচমকাই একটি প্রচণ্ড ধাতব শব্দ। তার পরেই প্রবল ঝাঁকুনি দিয়ে সব ওলটপালট হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে আর্তনাদ। কামরায় তখনও ঘুটঘুটে অন্ধকার। আধো ঘুমে বুঝে উঠতে পারছিলাম না, আসলে কী হচ্ছে। কাত হয়ে গিয়েছে কামরা। একটা পোড়া গন্ধও যেন পাচ্ছিলাম।

বাবা লোয়ার বার্থে ছিলেন। সে সময় তাঁকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কোনও রকমে মোবাইল জ্বেলে বাবাকে দেখতে পেলাম। বাবার প্রচণ্ড চোট লেগেছিল। তার পরে পিসিকেও খুঁজে পেলাম। পিসি মাঝের বার্থে ছিলেন। এর পরে জানালার কাচ ভাঙার জন্য প্রাণপণ ঘুষি, লাথি মারতে শুরু করলাম। দাদা আর আমি মিলে বাবা, পিসিকে ভাঙা জানলা দিয়েই বের করলাম। আর বেরোতেই বুঝলাম, ট্রেনের চার-চারটি কামরা উল্টে গিয়েছে।

Advertisement

কিন্তু বাকি ট্রেনটি কই?

সব কেমন ধোঁয়াশা লাগছিল। সামনে কোনও একটা স্টেশন দেখে দৌড়ে গেলাম। শীতের ভোরে কেউ কোথাও নেই। ট্রেনের বাকি যাত্রীরাও তত ক্ষণে দৌড়োদৌড়ি শুরু করে দিয়েছেন। খুঁজেপেতে একটা টেম্পো পেয়ে তাতে করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছলাম। বাবার চোয়ালে, মাথায় চোট লেগেছিল। পিসির হাত ভেঙেছে। বেশ কিছু ক্ষণ হয়ে গেল, কারও সাহায্য পাচ্ছিলাম না। তার পরে সেখান থেকে হাজিপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলাম দু’জনকেই।

হাসপাতালে অবশ্য দ্রুত চিকিৎসা হল। বাবার স্ক্যান থেকে জানা গেল, মাথায় রক্তক্ষরণ রয়েছে। পিসির হাতে ব্যান্ডেজ হল। তার পরে সেখান থেকেই রেলের দেওয়া অ্যাম্বুল্যান্স পটনা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে এল আমাদের।

এখন সেখানেই রয়েছি। বাবার জ্ঞান পুরোপুরি ফেরেনি। চিন্তায় রয়েছি। দ্রুত বাড়ি ফিরতে চাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন