CPM

ব্যাখ্যা দিন বিজয়ন, চাইছেন ইয়েচুরিরা

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে আগামী ২৫ ও ২৬ জুলাই। আগের পলিটব্যুরোর মতো এ বার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকও হবে অনলাইন। কেরলে সোনা পাচার-কাণ্ড ঘিরে যা যা ঘটেছে, তার বিস্তারিত আলোচনা চাইছেন সাধারণ সম্পাদক।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০ ০৪:৫২
Share:

পিনারাই বিজয়ন, সীতারাম ইয়েচুরি। ফাইল চিত্র।

বিধানসভা নির্বাচন বেশি দূরে নয়। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গোড়া থেকে প্রশংসা কুড়োলেও অন্য বিতর্কের জেরে এখন আবার সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার সুযোগ পেয়েছে বিরোধী শিবির। বিতর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের দফতরও। পরিস্থিতির এই মোচড়ে উদ্বিগ্ন সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেরলের গোটা বিতর্ক নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট চাইলেন তাঁরা। দলের অন্দরে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বক্তব্য, দুর্নীতির সঙ্গে তাঁরা আপস করছেন না, এই বার্তা জনমানসে যাওয়া জরুরি। করোনা নিয়ে কেরল মডেলের প্রচারে নেমেছে গোটা সিপিএম। সোনা-কাণ্ডে এ বার দলের অন্দরে ফের বিজয়নদের সঙ্গে ইয়েচুরি শিবিরের দূরত্ব ধরা পড়ছে!

Advertisement

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে আগামী ২৫ ও ২৬ জুলাই। আগের পলিটব্যুরোর মতো এ বার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকও হবে অনলাইন। কেরলে সোনা পাচার-কাণ্ড ঘিরে যা যা ঘটেছে, তার বিস্তারিত আলোচনা চাইছেন সাধারণ সম্পাদক। কেরলের রাজ্য নেতৃত্ব যদিও এই বিতর্ককে এত গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁদের যুক্তি, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন এক জন আমলার বিরুদ্ধেই সোনা পাচার-চক্রের লোকজনের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে এবং দ্রুত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বিরোধীরা হইচই করছে তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে। তবে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে রিপোর্ট তৈরির কাজে হাত দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। সূত্রের ইঙ্গিত, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে সেতুরক্ষার জন্য এ বার দলের তরফে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

ইয়েচুরি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য, বিতর্ক শুধু সোনা-কাণ্ড নিয়ে নয়। পরপর নানা ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, সরকারের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন সংস্থাকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে বা চুক্তিতে কাজ দেওয়া হয়েছে। তারা এমন সব কাজ করেছে, যাতে সরকারের ভাবমূর্তিতে আঁচ লাগছে। যার ফলে প্রশ্ন উঠছে সরকারের নজরদারি নিয়ে। এক নেতার কথায়, ‘‘এনডিএ জমানায় ২০০১ সালে শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির সময়ে আমাদের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর (যশবন্ত সিন্‌হা) দফতরে কেন নজরদারি ছিল না? এখন বিরোধীদের প্রশ্নের জবাব আমাদেরও তো দিতে হবে!’’

Advertisement

সোনা-কাণ্ডে এনআইএ তদন্ত করছে। ইয়েচুরিরা চাইছেন, রাজ্য সরকারের তরফেও যাবতীয় ধোঁয়াশা কাটিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়া হোক। সোনা-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশ ও সন্দীপ নায়ার ওই ঘটনার আগে শাসক শিবিরের সঙ্গে নিজেদের ‘পরিচিতি’ কাজে লাগিয়েছিলেন, এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিজয়ন সরকারের তরফে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাইছেন।

এমতাবস্থায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন, সিপিএম এবং সিপিআইয়ের দুই রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন ও কানম রাজেন্দ্রন আলোচনায় বসেছিলেন। শাসক শিবির যাতে প্রকাশ্যে একসুরে কথা বলে, সেই মর্মেই কথা হয়েছে তাঁদের। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই প্রথম বার, জুলাইয়ের শেষে এলডিএফের বৈঠকও ডাকা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন