ব্যবহারের অভাবেই ইতিহাস থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বহু ভাষা। সমীক্ষা বলছে, গত পাঁচ দশকে আমরা এ ভাবেই দু’শোরও বেশি প্রাচীন ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।
আর এই সব হারিয়ে যাওয়া ভাষা বাঁচাতে সরকারি কোনও রকম প্রচেষ্টা কিংবা সেই ভাষার ব্যাকরণ বা অভিধান বানানো কিন্তু যথেষ্ট নয়। বরং প্রয়োজন ব্যবহারিক জীবনে সেই ভাষাকে সচল রাখা। বংশ পরম্পরায় তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আর সেই কাজটাই হাতেকলমে করে দেখাচ্ছেন কর্নাটকের শিমোগা জেলার মাট্টুর গ্রামের আট থেকে আশি।
প্রাচীন ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভাষা সংস্কৃত। নয় নয় করেও ছ’হাজার বছর পুরনো এই ভাষা ক্রমশ বিলুপ্তির পথে। বেদ থেকে শুরু করে রামায়ণ, মহাভারত— ভারতের প্রাচীন সংস্কৃতির আকর রয়েছে এই সংস্কৃত ভাষাতেই। আর সেই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতেই উদ্যোগী মাট্টুর গ্রাম। মাট্টুরই ভারতের একমাত্র গ্রাম যেখানে মানুষ সংস্কৃত ভাষায় কথা বলেন।
গ্রামে ঢুকলে দেখা যাবে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা অবলীলায় সংষ্কৃতে কথা বলছে। আর এই গোটা বিষয়টার কৃতিত্বই ‘সংস্কার ভারতী’ নামে একটি স্কুলকে দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা। প্রায় পাঁচ হাজার পড়ুয়া প্রতিদিন সংস্কৃত শেখেন এখানে। ওই স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাচীন ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।
স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রাহা জানালেন, মাত্র দশ বছর বয়সেই এখানে বেদ পড়তে শুরু করে পড়ুয়ারা। আর প্রায় প্রত্যেকেই ঝরঝরে সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে যেতে পারে অনবরত।
তবে সবাই সব সময়ে শুধুই যে সংস্কৃত ভাষাতেই কথা বলেন এমনটা নয়, জানালেন স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী শশাঙ্ক। তাঁর মতে, ভারতের অধিকাংশ ভাষার উৎস সংস্কৃত হওয়ায় এই ভাষা শেখা বোধ হয় অনেক সহজ।
সংস্কৃতের মতো সুপ্রাচীন ভাষাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকারও। গত বছর সিবিএসই পাঠ্যক্রমে জার্মানের পাশাপাশি তৃতীয় ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে সংস্কৃতকেও।