Death Threat

ছ’বছর বয়সে খুনের হুমকি দেওয়া হয়, কন্যাকে বাঁচাতে ঘরবন্দি করেন বাবা! ২০ বছর পর বন্দিদশা কাটলেও লিসার চোখে আঁধার

এই কাহিনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া এক মেয়ের। সাল ২০০০। লিসার তখন বয়স ছয়। ছত্তীসগঢ়ের বস্তারের এক প্রত্যন্ত গ্রাম বকওয়ান্দের বাসিন্দা। সেই বয়সেই এক আতঙ্ক লিসার গোটা শৈশব ছিনিয়ে নেয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:৩৪
Share:

ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

তাঁর বয়সি মেয়েরা যখন স্কুলে যাচ্ছে, মাঠেঘাটে খেলে বেড়াচ্ছে, শুধু একটি আতঙ্কের জেরে ঘরবন্দি করে রাখা হল লিসাকে। দীর্ঘ ২০ বছর অন্ধকার ঘরে কাটিয়ে দু’দিন আগে যখন তাকে উদ্ধার করা হল, তখন দেখা গেল, দিনের আলোই তাঁর কাছে অসহ্য হয়ে উঠেছে। দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছে লিসা।

Advertisement

এই কাহিনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া এক মেয়ের। সাল ২০০০। লিসার তখন বয়স ছয়। ছত্তীসগঢ়ের বস্তারের এক প্রত্যন্ত গ্রাম বকওয়ান্দের বাসিন্দা। সেই বয়সেই এক আতঙ্ক লিসার গোটা শৈশব ছিনিয়ে নেয়। জানা গিয়েছে, ২০০০ সালে গ্রামেরই এক ব্যক্তি লিসাকে খুনের হুমকি দেন। তখন সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। খুনের হুমকিতে এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিল সে, একেবারে কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। এই ঘটনার কিছু দিনের মধ্যে লিসার মায়ের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনা লিসার শৈশবে আরও প্রভাব ফেলে। এখানেই শেষ নয়। তার কিছু দিনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন লিসার বাবা।

তার মধ্যে গ্রামেরই এক ব্যক্তি লিসাকে খুনের হুমকি দেওয়ায় মেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন লিসার বাবা। শেষমেশ মেয়েকে ওই আতঙ্ক থেকে বাঁচাতে, নিরাপদে রাখতে একটি ঘরের মধ্যে বন্দি করে দেন। ভেবেছিলেন এটাই বোধহয় লিসাকে নিরাপত্তা দেবে। শুধু একটিমাত্র দরজা। জানলাও নেই। এমন একটি ঘরে লিসাকে বন্দি করে রাখা হয়। না কোনও আলো, না কোনও কথাবার্তা, পড়শি এবং তার বয়সি ছেলেমেয়েদের সংস্পর্শ থেকে অনেকটাই দূরে চলে যায় লিসার শৈশব। শুধু দরজা খুলে খাবার দেওয়া হত। আবার দরজা বন্ধ করে দিতেন তার বাবা। এ ভাবেই অন্ধকার ঘরে থাকতে থাকতে লিসার শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে যায়। সম্প্রতি লিসার বন্দিদশার খবর পেয়েছিল রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতর। তাদেরই একটি দল গিয়ে লিসাকে উদ্ধার করে। অন্ধকার ঘরের বন্দিদশা কাটল ঠিকই, কিন্তু লিসার চোখে নেমে এসেছে আঁধার। তার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ। দৃষ্টিশক্তি হারাতেও পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিজের নাম বলতে পারছে সে। কী ভাবে কথা বলতে হয়, সেই ভাষাও নেই তার মুখে। ভয় আর আতঙ্কই তাঁর গোটা মনকে নাগপাশের মতো ঘিরে রেখেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement