আধারে বন্ধ হবে না ব্যাঙ্ক প্রতারণা: আদালত

পিএনবি-তে নীরব মোদীর ১৩,৪০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে দেখা গিয়েছিল, ব্যাঙ্কের অফিসারদের সঙ্গে যোগসাজশ ছিল নীরবের সংস্থার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বলে অর্থ মন্ত্রকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৮
Share:

আধারের পক্ষে জোর গলায় সওয়াল করতে গিয়ে ব্যাঙ্কের জালিয়াতি নিয়ে খোঁচা খেল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল আজ সুপ্রিম কোর্টে দাবি করেছিলেন, ব্যাঙ্কে জালিয়াতি আটকাতে আধার কাজে আসতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতিরা এই দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। নাম না করে হলেও, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে নীরব মোদী-মেহুল চোক্সীর কেলেঙ্কারির উদাহরণ টেনে আনেন বিচারপতিরা। প্রশ্ন তোলেন, প্রতারকদের চিনে-জেনেই ব্যাঙ্ক ঋণ দেয়। জালিয়াতদের সঙ্গে ব্যাঙ্কের অফিসারদের যোগসাজশ থাকে। সেখানে আধার কোন কাজে লাগবে?

পিএনবি-তে নীরব মোদীর ১৩,৪০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে দেখা গিয়েছিল, ব্যাঙ্কের অফিসারদের সঙ্গে যোগসাজশ ছিল নীরবের সংস্থার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বলে অর্থ মন্ত্রকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। স্বাভাবিক ভাবেই সেই প্রসঙ্গ সুপ্রিম কোর্টে ওঠায় অস্বস্তিতে পড়েছে মোদী সরকার।

Advertisement

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে আধার মামলায় এখন কেন্দ্র আধারের পক্ষে সওয়াল করছে। সেখানেই আজ কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার যোগ করার অন্যতম কারণ হল জালিয়াতির মোকাবিলা। সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘বেআইনি লেনদেন আধার ঠেকাতে পারবে না। ব্যাঙ্ক জালিয়াতিও আটকানো যাবে না।’’

বিচারপতি সিক্রি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘আপনারা কি ধরে নিচ্ছেন, দেশের সবাই জালিয়াত, প্রতারক?’’

মোবাইলের সিম-কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযুক্তিকরণ নিয়ে বিচারপতি এ কে সিক্রি প্রশ্ন তোলেন, এর পিছনে যুক্তি কী? কেন্দ্র যুক্তি দেয়, এর ফলে সন্ত্রাসবাদে লাগাম পরানো যাবে। বিচারপতি চন্দ্রচূড় প্রশ্ন তোলেন, সন্ত্রাসবাদীরা কি সিম-কার্ডের জন্য আবেদন করে?

কেন্দ্রের আরও যুক্তি ছিল, আধারের ফলে সরাসরি গরিবের হাতে সরকারি ভাতা, রেশন পৌঁছে যাচ্ছে। এর ফলে দারিদ্র ও আয়ের বৈষম্য দূর হবে। বিচারপতি সিক্রি মন্তব্য করেন, ‘‘ধনী-গরিব ফারাক তো আরও বাড়ছে। দেশের ৭০ শতাংশ সম্পদই মাত্র ১ শতাংশ মানুষের হাতে জমা রয়েছে।’’

বিচারপতি সিক্রি যুক্তি দেন, সরকার আধারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে রেশনের খাবার দিচ্ছে।

বেণুগোপাল বোঝানোর চেষ্টা করেন, যে ব্যক্তিগত তথ্য নেওয়া হচ্ছে, তা খুবই সামান্য। তখন বিচারপতি অশোক ভূষণ কটাক্ষ করেন, ‘‘এক জনের কাছে যা সামান্য, তা অন্য জনের কাছে সামান্য না-ও হতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন