অভিযুক্ত মন্ত্রী ইমরান হুসেন
দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার এক বছর পূর্ণ করবে আগামী রবিবার। তার ঠিক আগেই আর এক মন্ত্রীর নাম জড়াল দুর্নীতিতে। কিছু দিন আগেই জাল মার্কশিট-কাণ্ডে আইনমন্ত্রীর পদ খুইয়েছেন জীতেন্দ্র সিংহ তোমর। এ বার দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী ইমরান হুসেন। কংগ্রেস আজ ‘স্টিং অপারেশন’-এর একটি ভিডিও ও অডিও টেপ প্রকাশ করেছে। তাতে সশরীর মন্ত্রী ইমরান বা তাঁর গলা নেই। তবে টেপদু’টিতে ধরা পড়েছে, ইমরানের ভাই ফুকরান ও ব্যক্তিগত সহায়ক হামাদ মন্ত্রীর নাম করে তোলা চাইছেন। অভিযোগ খণ্ডনে আপের কোনও নেতা বা মন্ত্রী মুখ খোলেননি।
ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগটি ঠিক কী? কেজরীবাল মন্ত্রিসভার সংখ্যালঘু মুখ ইমরান থাকেন পুরনো দিল্লির বাল্লিমারানে। মহম্মদ কাসেম নামে সেখানকার এক বাসিন্দা পৈতৃক ভিটেয় পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি বানাচ্ছেন। স্টিং অপারেশনটি চালিয়েছেন তিনিই। ভিডিও ও অডিও টেপে ধরা পড়েছে, ফুকরান ও হামাদ কখনও কাসেমের বাড়ি গিয়ে, কখনও ফোনে হুমকি দিচ্ছেন, ওই বাড়ি তৈরির জন্য ৩০-৩৫ লক্ষ টাকা মন্ত্রীকে দিতে হবে। মেহনতের পয়সা খামোখা মন্ত্রীকে দেবেন কেন? জবাবে ইমরানের ভাই ও সহায়ক বলছেন, ‘‘বাহ্! ভোটে লড়তে খরচা নেই! নির্বাচনে লড়তে ও তার পর মন্ত্রিত্ব পেতে ৫-৭ কোটি টাকা চলে গিয়েছে। সেই টাকা উঠবে কোথা থেকে? এ ভাবেই তো আসবে!’’
এই টেপ প্রকাশ্যে এনে কংগ্রেসের দাবি, ইমরানকে অবিলম্বে ইস্তফা দিতে হবে। কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় মাকেনের কথায়, ‘‘ইমরান ইস্তফা না দিলে কংগ্রেস তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করবে। চাইবে সিবিআই তদন্তও।’’ ১৪ ফেব্রুয়ারি সরকারের বর্ষপূর্তির দিনে মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ফোনে দিল্লিবাসীর অভাব অভিযোগ শুনবেন। কেজরীবালের সেই ‘ফোন পে চর্চা’য় ইমরানের তোলাবজি নিয়ে ফোনে-ফোনে জেরবার করার পরিকল্পনা করেছে কংগ্রেস।
পঞ্জাবে বিধানসভা ভোট সামনে। গত লোকসভা ভোটে দেশের আর কোনও প্রান্তে তেমন দাগ কাটতে না পারলেও পঞ্জাবে ভাল ফল করেছিল আপ। এখন অকালি-বিজেপি জোটের বিরোধী ভোটে তারা ভাগ বসালে কংগ্রেসের বিপদ। সন্দেহ নেই আপের ভাবমূর্তি তাই যতটা সম্ভব ম্লান করতে চায় কংগ্রেস। টেপ দু’টিকে তারই অস্ত্র করছে তারা। কেজরীবালকে বিঁধে মাকেন আজ বলেন, ‘‘অন্না হজারের হাত ধরে দুর্নীতি দমনে লোকপাল বিল পাশের দাবিতে কেজরীবাল আন্দোলন শুরু করেছিলেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে আগে-পিছে দুর্নীতিবাজদের নিয়ে ঘুরছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। আপের এক-তৃতীয়াংশ বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও না কোনও অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।’’