দাবি খারিজ করল কমিশন

নকল ইভিএমে কারচুপি করে দেখাল আপ

গুরু মারা বিদ্যায় অরবিন্দ কেজরীবালকে হেনস্থা করতে চেয়েছিলেন শিষ্য কপিল মিশ্র। কিন্তু কেজরীবাল শিষ্যের মুখোমুখি তো হলেনই না, উল্টে কপিলকে অপ্রাসঙ্গিক করে ইভিএম নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আরও বড় সংঘাতে নেমে পড়লেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ০৪:০১
Share:

ছবি: সংগ্রহ।

গুরু মারা বিদ্যায় অরবিন্দ কেজরীবালকে হেনস্থা করতে চেয়েছিলেন শিষ্য কপিল মিশ্র। কিন্তু কেজরীবাল শিষ্যের মুখোমুখি তো হলেনই না, উল্টে কপিলকে অপ্রাসঙ্গিক করে ইভিএম নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আরও বড় সংঘাতে নেমে পড়লেন।

Advertisement

আজ সিবিআইয়ের কাছে কেজরীর বিরুদ্ধে দু’কোটি টাকা ঘুষের অভিযোগ জানাতে যান কপিল। এমনকী গুরুকে চিঠি লিখে তাঁর বিরুদ্ধে জীবনের সব থেকে বড় যুদ্ধে নামার জন্য আর্শীবাদও চান। কপিল যখন যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন আপ জানায়, বিধানসভার এক দিনের বিশেষ অধিবেশনে ইভিএম কারচুপির রহস্য ফাঁস করতে চলেছে তারা। তা দেখতে আমন্ত্রণ জানানো হয় কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, আরজেডি ও জেডিইউ নেতাদের। উদ্দেশ্য একটাই, অ-বিজেপি দলগুলিকে এক ছাতার তলায় এনে কেন্দ্রবিরোধী আন্দোলন তীব্র করা। পরে আপকে কটাক্ষ করে বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘‘দিল্লিতে ৬৭টি আসন সম্ভবত এ ভাবে কারচুপি করেই পেয়েছিল আপ।’’

বিধানসভার অধিবেশন শুরু হতেই অভবত্যার অভিযোগে মার্শাল ডেকে বের করে দেওয়া হয় বিরোধী দলনেতা বিজেপির বিজেন্দ্র গুপ্তকে। ইভিএম নিয়ে আলোচনা শুরু করেন আপের অলকা লম্বা। তার পরেই আইআইটির ছাত্রদের বানানো ইভিএম ও ব্যালট বাক্সের প্রটোটাইপ বা নকল নিয়ে কারচুপির রহস্য ফাঁস করতে নামেন ইঞ্জিনিয়ার-বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ। প্রথমে নকল ভোট করে দেখান যে যন্ত্রটি ঠিক রয়েছে। তার পর সেটিকে রিসেট বা আগের অবস্থায় নিয়ে আসেন তিনি। সৌরভ বিধানসভায় বলেন, ‘‘ইভিএমে প্রত্যেক দলেরই একটি কোড থাকে। যেমন এই ইভিএমে বিজেপির কোড হল ১২৩৪১৪। যে ব্যক্তি কোডটি জানেন তিনি ভোট দিতে এসে প্রথমে বিজেপি প্রার্থীর বোতাম টিপবেন। এর পর ওই নম্বরের ক্রমানুযায়ী কেবল বোতাম টিপতে হবে ওই ভোটারকে। তা হলেই পরের সব ভোট যাবে বিজেপির ঘরে।’’ সৌরভ হাতেকলমে দেখান কোড ব্যবহার করায় কী ভাবে সব ভোট বিজেপির ঘরে চলে যাচ্ছে। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘‘গুজরাতের ভোটে আমাদের তিন ঘন্টা সময় দিলে কোনও বুথে জিততে পারবে না বিজেপি। কারণ মেশিন হ্যাক করতে লাগে ৯০ সেকেন্ড।’’

Advertisement

পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১২ মে সব দলের সঙ্গে বৈঠকের পরে ইভিএম হ্যাক করার প্রতিযোগিতার দিন ঘোষণা করবে কমিশন। তাদের চ্যালেঞ্জ, প্রটোটাইপ কেন, আসল ইভিএম ‘হ্যাক’ করে দেখাক আপ। আর প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশির মতে, ‘‘সৌরভের ব্যবহৃত যন্ত্রটি আসলে খেলনা।’’ কমিশনের হুঁশিয়ারি, যদি দিল্লি পুরসভায় ব্যবহৃত মেশিন সৌরভ ব্যবহার করেন, তা হলে তাঁকে শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু সৌরভ বিধানসভায় বিষয়টি দেখানোয় জনপ্রতিনিধিদের রক্ষাকবচের কারণে কমিশনের পক্ষে সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন।

ইভিএম বির্তকের মধ্যেই যদিও হারিয়ে গিয়েছে কপিল-কেজরীর দ্বন্দ্ব। আজ সিবিআইয়ের কাছে তিনটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন কপিল। ভেবেছিলেন, জবাব আসবে। কিন্তু তা না করে বিতর্ক ইভিএমের মতো বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে নিয়ে যান কৌশলী কেজরীবাল। বিতর্ক জিইয়ে রাখতে আগামিকাল থেকে অনশনে বসবেন কপিল। তবে এ দিন সিবিআই জানিয়েছে, কপিল মিশ্রের আনা দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখবে তারা। আপকে চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে আয়কর বিভাগও। তাদের অভিযোগ, আপের তরফে যে আয়ের হিসেব দেওয়া হয়েছে, তাতে কুড়ি হাজার টাকার বেশি অনুদান দিয়েছেন, এমন অনেকের নাম জানানো হয়নি। ১৫ মে ডাকা হয়েছে আপ নেতৃত্বকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন