অভিনন্দন পাঠক
ছিল সম্পদ, হল বিপদ!
নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাদৃশ্যই এত দিন তাঁকে সুখ্যাতি দিয়েছে। গত বছর তিনেক ধরে মোদী সেজে দিব্যি ছিলেন। নানা জায়গায় সেলাম-টেলামও জুটত। কিন্তু সেই মোদী-রূপই এ বার অভিনন্দন পাঠকের বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে! গুজরাতের ভোটে পাতিদার নেতা হার্দিক পটেলের দলের ছেলেপুলেদের কাছ থেকে বিস্তর গালাগাল! ঠ্যাঙানিও খেতে হয়েছে!
বিপাকে পড়ে এখন বিজেপির শরণাপন্ন হয়েছেন ৫১ বছর বয়সী অভিনন্দন। নরেন্দ্র মোদীর রূপধারী অভিনন্দনের আর্জি, তাঁর একটা জিপ চাই। সঙ্গে কিছু বিজেপি কর্মী। বকলমে তাঁরা দেহরক্ষীর কাজ করবেন।
গুজরাতের বিজেপি নেতারা নরেন্দ্র মোদীর কথায় ওঠাবসা করলেও তাঁর রূপধারীর কথায় এখনও কান দেননি। ফলে বেশ বিপাকে ‘নকল’ মোদী।
কে ইনি? আদতে উত্তরপ্রদেশের মানুষ অভিনন্দন কর্মসূত্রে বহু দিন কাটিয়েছেন সাহারানপুরের। সেখানে একটি স্কুলে ছাত্রদের শরীরচর্চা শেখাতেন। বছর কয়েক আগে হরিদ্বারের গঙ্গায় ডুব মেরে উঠতেই কয়েক জন তাঁকে দেখে ‘আরে, নরেন্দ্র মোদী!’ বলে চিৎকার করে ওঠে। প্রথমটা নিছক মজা ভেবেছিলেন। কিন্তু তার মধ্যেই একদিন সাহারানপুরের থানায় হাবিলদারেরা তাঁকে দেখে প্রায় স্যালুট ঠুকে ফেলেন! অভিনন্দন বোঝেন, তাঁর সঙ্গে বেশ মিল মোদীর। ২০১৪-র ভোটে মোদী-ঝড় উঠল। অভিনন্দনও ভোল পাল্টে পুরোপুরি মোদী সেজে বসেন। একই রকম চশমার ফ্রেম, কুর্তা, হাফ-জ্যাকেট, ডান হাতে উল্টো করে পড়া কালো চামড়ার ঘড়ি। ভোটে কয়েক জায়গায় বিজেপি তাঁকে প্রচারেও কাজে লাগায়। এ সব করতে গিয়ে স্কুলের চাকরিটা গেলেও গায়ে মাখেননি অভিনন্দন। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে বারাণসীর একটি কেন্দ্র থেকে আরপিআই টিকিটে প্রার্থীও হন। মোদী সেজে প্রচার করলেও অবশ্য হেরেই যান।
আরও পড়ুন: ভোটের গুজরাত যেন বদলের বাংলা
সেই তিনিই এ বার মোদীর রাজ্যে গিয়ে মহা বিপাকে পড়েছেন। গত শুক্রবার রাজকোটের কাছে ধোরাজিতে হার্দিকের সমর্থকেরা তাঁকে ধাওয়া করেন। গালাগালিও জোটে। এর পর শাপারের কাছে মারধর খান। অভিনন্দনের অনুযোগ, ‘‘আমি যে নরেন্দ্র মোদী নই, তা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ওরা খুব রেগে ছিল। বিজেপি একটা গাড়িও দিচ্ছে না। বাসে-অটোতে চেপেই আমাকে ঘুরতে হচ্ছে।’’
মোদীকে ‘বড় ভাই’ বললেও এখনও সামনাসামনি হননি তাঁর। বার তিরিশেক প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গিয়ে সাক্ষাৎ চেয়েও ব্যর্থ। যদিও তাতে তাঁর মোদী-ভক্তি কমেনি।
শুধু মোদী-রাজ্যে মোদী-সাজাটাই মাথায় উঠেছে অভিনন্দনের!