মানিক সরকার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অনাড়ম্বর জীবনযাপন দুই মুখ্যমন্ত্রীরই ভাবমূর্তির অন্যতম উপাদান। সেখানে অল্প ব্যবধানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে দিলেন মানিক সরকার।
ভোট-গরম ত্রিপুরায় মানিকের এই ভাবমূর্তি দুরমুশ করতেই ঘাম ছোটাচ্ছেন অমিত শাহ। কিন্তু ‘গরিব’ মুখ্যমন্ত্রীদের তালিকায় মানিকের নামই শীর্ষে। সামান্য পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চার লক্ষ টাকার ব্যবধানে টেক্কা দিয়েছেন মানিক।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) নামে এক অসরকারি সংস্থা সম্প্রতি দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীর সম্পত্তি ও তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছে। যার মধ্যে হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। সম্পত্তির হিসেব করা হয়েছে মূলত বর্তমান মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে প্রার্থী হিসেবে দেওয়া হলফনামার ভিত্তিতে। দেখা যাচ্ছে, ধনী মুখ্যমন্ত্রীরা সকলে কোটিপতি। ৩১ জন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে এমন কোটিপতির সংখ্যাই ২৫ জন। সবার উপরে চন্দ্রবাবু নায়ডু।
আরও পড়ুন: সেনা-মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান ভাগবত: রাহুল
অন্য দিকে স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে মমতার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩০ লক্ষ ৪৫ হাজার ১৩ টাকা। মানিকের ২৬ লক্ষ ৮৩ হাজার ১৯৫ টাকা। মামলার নিরিখেও মহারাষ্ট্র, কেরল, দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রীরা এগিয়ে। সেখানেও ধারেকাছে নেই মমতা।
চন্দ্রবাবু নায়ডু
পেমা খান্ডু
অমরেন্দ্র সিংহ
চন্দ্রশেখর রাও
মুকুল সাংমা
অন্ধ্রপ্রদেশ
অরুণাচলপ্রদেশ
পঞ্জাব
তেলঙ্গানা
মেঘালয়
১৭৭+
১২৯+
৪৮+
১৫+
১৪+
বিজেপি সগর্বে বলছে, প্রথম সারির বিজেপি রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা কিন্তু ধনী-তালিকায় শীর্ষে নেই! কিন্তু ধনী তালিকায় তৃতীয় নাম কংগ্রেসি অমরেন্দ্র সিংহের। উত্তরে কংগ্রেস বলছে, ‘তা কী করে হয়! দ্বিতীয় ধনী মুখ্যমন্ত্রী তো বিজেপিরই, অরুণাচলের পেমা খান্ডু।’ বিজেপির ব্যাখ্যা, পেমা গোড়া থেকে বিজেপি ভাবধারায় পুষ্ট নেতা নন।
মানিক সরকার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মেহবুবা মুফতি
মনোহরলাল খট্টর
রঘুবর দাস
ত্রিপুরা
পশ্চিমবঙ্গ
জম্মু ও কাশ্মীর
হরিয়ানা
ঝাড়খণ্ড
২৬+
৩০+
৫৫+
৬১+
৭২+
মামলার ব্যাপারে কিন্তু এগিয়ে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীরা। কংগ্রেস তা নিয়ে খোঁচাও দিয়েছে। এখানে বিজেপির দাবি, রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে অনেকেই মামলা করে দেন। মামলার সংখ্যা কিছু প্রমাণ করে না।
আর মানিক-মমতা? সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি বলছেন, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রীরা অনাড়ম্বর জীবনযাপন করেন। বাংলায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও করতেন। মানিককে ত্রিপুরার মানুষ তাঁদের গর্ব বলে মনে করেন।’’ বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষি লেখির দাবি, ‘‘সব ভাঁওতা! মানিকের হেলিকপ্টারের বিলটা দেখুন!’’ মমতা সম্পর্কে বাবুল সুপ্রিয় বললেন, ‘‘আমি নয়, মমতাকে নিয়ে যা বলার মা-মাটি-মানুষই বলে আসছে, দিদির পায়ে হাওয়াই চটি, দিদির ভাইরা কোটিপতি!’’ শুনে তৃণমূলের ডেরেক ও ব্রায়েনের জবাব, ‘‘মমতাদির জীবন আর সংঘর্ষই তাঁর মূলধন। সার্টিফিকেট মানুষই দেন, আশীর্বাদ তাঁরাই করেন!’’