গ্রেটার নয়ডায় আক্রান্ত কেনীয় তরুণী। —ফাইল চিত্র।
ভারতে বসবাসকারী বিভিন্ন আফ্রিকান দেশের নাগরিকদের উপর একের পর এক হামলার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল প্রায় গোটা আফ্রিকা মহাদেশ। বিভিন্ন আফ্রিকান দেশের রাষ্ট্রদূতরা একযোগে এই ঘটনার নিন্দা করলেন। দিল্লির কাছেই গ্রেটার নয়ডায় গত সপ্তাহে আফ্রিকান সম্প্রদায়ের উপর একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটেছে। তার প্রেক্ষিতেই বৈঠকে বসেছিল ‘দ্য হেডস অব আফ্রিকান মিশন অ্যাক্রেডিটেড টু ইন্ডিয়া’। আফ্রিকানদের উপর এই হামলাকে তাঁরা সর্বসম্মত ভাবে ‘জাতিবিদ্বেষী হামলা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ভারতীয় প্রশাসন এই হামলা প্রতিরোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এবং এই হামলার স্পষ্ট নিন্দাও ভারত করেনি— আফ্রিকান রাষ্ট্রদূতরা এমনই মন্তব্য করেছেন।
আফ্রিকান দেশগুলির রাষ্ট্রদূতদের এই সম্মিলিত বিবৃতি ভারতকে নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে ফেলল। গত সোমবার গ্রেটার নয়ডায় নাইজিরীয়দের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এক স্কুল পড়ুয়া তরুণের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোলমালের সূত্রপাত। অতিরিক্ত মাদকের প্রভাবে ওই তরুণের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দা কয়েক জন নাইজিরীয়ের কাছ থেকেই ওই তরুণ মাদক কিনেছিল বলে অনেকে দাবি করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই নাইজিরীয়দের আটকও করে। কিন্তু প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভারতে পড়তে আসা বিদেশী পড়ুয়ারা একজোট হয়ে প্রতিবাদে। —ফাইল চিত্র।
পুলিশ ছেড়ে দিলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ আইন নিজেদের হাতে তুলে নেন। নাইজিরীয়দের বাসস্থান আক্রান্ত হয়। রাস্তায় তাঁদের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। একটি শপিং মলেও এক নাইজিরীয় তরুণকে নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়। এক কেনীয় তরুণীও আক্রান্ত হন।
আরও পড়ুন: সোমালিয়া উপকূলের কাছে জলদস্যুদের হাতে অপহৃত ইন্ডিয়ান অয়েলের জাহাজ
নাইজিরিয়ার বিদেশ মন্ত্রক সে দেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানায় এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার দাবি জানায়। তবে ভারত সরকার একে প্রথমেই ‘জাতিবিদ্বেষী হামলা’ আখ্যা দিতে রাজি হয়নি। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছ থেকে গ্রেটার নয়ডার ঘটনার রিপোর্ট চান। তিনি আফ্রিকানদের উপর হামলার নিন্দাও করেন। তবে আফ্রিকান রাষ্ট্রদূতরা মনে করছেন, ভারত সরকার যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, এই ভয়ঙ্কর ঘটনার পক্ষে যথেষ্ট নয়।