নজর এ বার পশ্চিমবঙ্গ, দরকারে বাংলায় ঘাঁটি গাড়বেন অমিত

উত্তরভারতে বিপুল জয়ের পর এ বার বিজেপি-র লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ আজ এক একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, এক সময় বলা হতো পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতে বিজেপি-র জোর নেই। সেই মিথ ভাঙছে।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৭ ০৪:২২
Share:

ফাইল চিত্র।

উত্তরভারতে বিপুল জয়ের পর এ বার বিজেপি-র লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ আজ এক একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, এক সময় বলা হতো পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতে বিজেপি-র জোর নেই। সেই মিথ ভাঙছে। ‘‘ওড়িশায় শাসক দলকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যদি ধাক্কা দিতে পারি, তবে বাংলায় পারব না কেন?’’ সেই লক্ষ্য পূরণ করতে শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গ সফরে যাবেন অমিত।

Advertisement

প্রশ্ন: আপনি বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু রাজ্যে বিজেপি কোথায়?

অমিত: বিজেপি কি এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে? অতীতে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ছিল না। এখন আগের থেকে বেশি আছে। লোকসভায় তো এক সময় আমাদের দু’টি আসন ছিল। এখন ২৮২। আপনারা বারবার বলতেন, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র শক্তিবৃদ্ধির আর অবকাশ নেই। মানুষ তা-ও ভুল প্রমাণ করে দিয়েছে। আবার অন্য দিকে দেখুন, কমিউনিস্টরা একদা মহারাষ্ট্রে ছিলেন, উত্তরপ্রদেশেও। আজ তাঁরা কোথায়! একটা সময় কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশের চালিকাশক্তি ছিল। আজ কোথায়?

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গে আমাদের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। রাজ্যের মানুষ বাম ও তৃণমূলের মেকি ধর্মনিরপেক্ষতা দেখে ক্লান্ত। বিজেপি-র হাত ধরেই প্রকৃত জাতীয়তাবাদী শক্তির পুনরুত্থান সম্ভব। পশ্চিমবঙ্গে আগামী দিনে একক ভাবে বিজেপি-ই ক্ষমতায় আসবে। রাজনীতির নতুন মানচিত্র তৈরি করাই আমার ও দলের কর্মীদের কাজ।

তার মানে এ বার টার্গেট কলকাতা?

অমিত: খুব শীঘ্রই বিভিন্ন রাজ্যে সফর শুরু করব। কর্নাটক, হিমাচল প্রদেশ যাব। গুজরাত তো প্রায়ই যাচ্ছি। পশ্চিমবঙ্গেও যাব। দরকার হলে সাত দিন থাকব। জেলায় জেলায় ঘুরব। বাংলার মানুষের সমর্থন আছে আমাদের সঙ্গে। তাঁদের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছতে হবে।

আপনার এই বসার ঘরের দেওয়াল বীর সাভারকরের ছবি। মাধব সদাশিব গোলওয়ালকরের ছবি। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র সঙ্গে আরএসএসের সম্পর্কটা ঠিক কী?

অমিত: বিজেপি-র সঙ্গে আরএসএসের ঘনিষ্ঠ সমন্বয় আছে। উত্তরপ্রদেশেও ছিল, পশ্চিমবঙ্গেও আছে। সেখানে জেলায় জেলায় আরএসএসের সংগঠন দারুণ কাজ করছে। ওদের কাজকর্মের সঙ্গে প্রত্যক্ষ রাজনীতিকে মেলাবেন না। ওরা সমাজসেবায় নিয়োজিত। বিজেপি এই সমাজসেবায় বিশ্বাস করে।

আরও পড়ুন: মণিপুরও বিজেপির, কাল মুখ্যমন্ত্রী পদের শপথ নিচ্ছেন এন বীরেন সিংহ

অমিত: সাংগঠনিক ভিত্তি না-থাকলে মানুষের সমর্থনকে ভোটে রূপান্তরিত করা যায় না। বাংলায় আমাদের সংগঠনকে মজবুত করতে হবে। সে জন্য জেলায় জেলায় আরও কর্মী ও সংগঠক দরকার।

পশ্চিমবঙ্গে ৩০% মানুষ সংখ্যালঘু। মেরুকরণ এ রাজ্যে সহজ?

অমিত: বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণ করে না। সংবাদমাধ্যমের একাংশে তা ভুল ভাবে প্রতিভাত হয়েছে। এ বার উত্তরপ্রদেশের মানুষ ভোট দিয়েছেন দেশাত্মবোধের প্রশ্নে। জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে। আমরা মেকি ধর্মনিরপেক্ষতাকে মানুষের সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে ভোটব্যাঙ্ক হিসাবে ব্যবহারের বিরুদ্ধে। আমরা সংখ্যালঘুদের আর্থিক উন্নয়ন চাই। এ জন্য উত্তরপ্রদেশের মুসলিম সমাজ এ বার আমাদের ভোট দিয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে আপনাদের প্রচারের বিষয়বস্তু কী হবে?

অমিত: কমিউনিস্ট শাসনে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র খুন হয়েছে। তৃণমূল সেই কমিউনিস্ট শাসনের একটা এক্সটেনশন। চাকরি নেই। আছে দুর্নীতি। বিজেপি তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে। আর বিকল্প উন্নয়নের একটা মডেল তুলে ধরবে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কেন্দ্রের পারস্পরিক সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রীয় বিষয়। কিন্তু বিজেপি-র কাজ পশ্চিমবঙ্গ থেকে তৃণমূলকে বিদায় জানানো। অপেক্ষা করুন। অনেক কিছু ঘটা বাকি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন