বিহার আছে, কিন্তু খৈনি নেই!
সে দিকেই এগোতে চাইছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে মুখের ক্যানসারে বিহার দেশের প্রথম সারিতে থাকায় খৈনির উৎপাদন এবং বিক্রি বন্ধে সরকার এই প্রক্রিয়া শুরু করছে বলে মনে করছেন তথ্যাভিজ্ঞ মহলের দাবি।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারকে লেখা এক চিঠিতে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব সঞ্জয় কুমার খৈনিকে ‘খাদ্য পণ্য’-এর তালিকাভুক্ত করার আবেদন জানিয়েছেন। আর সেই চিঠিকে ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিশেষজ্ঞদের দাবি: ‘খাদ্য সুরক্ষা এবং স্ট্যান্ডার্ড কর্তৃপক্ষ’ দ্বারা খৈনিকে ‘খাদ্য পণ্য’ হিসেবে চিহ্নিত না করলে সরকার এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে না। চিঠির কথা স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্যসচিব। তবে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাননি।
২০১৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে বিহারে গুটখা, পান মশলা, জর্দার ক্রয়-বিক্রয়, গুদামজাত করার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাজ্য সরকার। কিন্তু খাদ্য পণ্যের তালিকায় না থাকায় খৈনির উপরে সেই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা যায়নি। সরকারি হিসেবে, দেশের প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ প্রতি বছর তামাক সেবনের কারণে মারা যান। তার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশের মৃত্যু হয় মুখের ক্যানসারে। এবং আক্রান্তদের একটা বড় সংখ্যা বিহারের বাসিন্দা।
সঞ্জয় কুমারের মতে, ‘‘বিহারের প্রতি পাঁচ জনে এক জন খৈনি সেবন করেন। এখন যা নিয়ম রয়েছে তাতে সিগারেটের ওপরে তামাক ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ আইন প্রয়োগ হয়। কিন্তু রাজ্যে খৈনির ব্যবহার বেশি তাই তাতে নজর দেওয়ার দরকার আছে।’’ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ থেকে প্রত্যন্ত গ্রামের অতি সাধারণ মানুষও খৈনির ‘সেবক’। জাতপাতের বিহারে খৈনি আদানপ্রদান জাতপাতের কঠোর ব্যবধানকে শিথিল করে দেয়। কিন্তু তার ফল মারাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঞ্জয় জানিয়েছেন, সাধারণ ভাবে বিহারে গত সাত বছরে তামাকের ব্যবহার অনেকটাই কমেছে। ছিল ৫৩ শতাংশ, হয়েছে ২৫ শতাংশ।
কিন্তু খৈনির ব্যবহারে কোনও পরিবর্তনই হয়নি। ব্যবহারকারীর সংখ্যা উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন তিনি।