Covid Vaccines

কোভিশিল্ডের পরে প্রশ্নে কোভ্যাক্সিনও

সম্প্রতি অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরি কোভিড-টিকার প্রাণঘাতী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল দেশে। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি করেছিল কোভিশিল্ড টিকা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৪ ০৮:৩০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ভারত বায়োটেক নির্মিত কোভিড টিকা কোভ্যাক্সিন-এর দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করছিলেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (বিএইচইউ)-এর একদল গবেষক। সম্প্রতি সেই গবেষণার রিপোর্টে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, কোভ্যাক্সিনেরও যথেষ্ট ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরি প্রতিষেধক এজ়েডডি১২২২-র (ভারতে নাম কোভিশিল্ড) বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, এই টিকা নিয়ে বহু মানুষের ক্ষতি হয়েছে, এমনকি প্রাণহানিও ঘটেছে। একাধিক মামলাও হয়। এর পরে প্রতিষেধকটি বাজার থেকে তুলে নিয়েছে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা। এ বার কোভ্যাক্সিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠল।

বিএইচইউ-এর গবেষকদের পেশ করা রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন এ রকম ৯২৬ জনের ওপরে এক বছর যাবৎ পর্যবেক্ষণ চালানো হয়েছিল। বিজ্ঞানীদের দাবি, এঁদের মধ্যে ৩০ শতাংশের দেহে শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে চর্মরোগ, স্ট্রোক, গিলান-বারি সিন্ড্রোম ও রক্ত জমাট বাঁধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। এই অবস্থাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘অ্যাডভার্স ইভেন্ট অব স্পেশাল ইন্টারেস্ট’ বা ‘এইএসআই’ বলা হয়। এ ছাড়াও মহিলাদের মধ্যে ঋতুস্রাবজনিত নানা জটিলতা দেখা গিয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরি কোভিড-টিকার প্রাণঘাতী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল দেশে। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি করেছিল কোভিশিল্ড টিকা। ব্রিটিশ আদালতে সংস্থার তরফে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হয়। আদালতে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা জানিয়েছিল কোভিশিল্ডের প্রভাবে রক্ত জমাট বাঁধা বা প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যাওয়ার মতো সমস্যায় ভুগতে পারেন মানুষ।

ভারতে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে দু’টি কোভ্যাক্সিন টিকা দেওয়া হয়েছিল দেশবাসীকে। বিএইচইউ-এর গবেষকেরা জানিয়েছেন, সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৬৩৫ জন নাবালক এবং ২৯১ জন প্রাপ্তবয়স্ক। ২০২২ থেকে ২০২৩-এর অগস্ট মাস পর্যন্ত এই সমীক্ষা করা হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৩০৪ জন সদ্য কৈশোরে পা দিয়েছে এমন কিশোর-কিশোরী (৪৭.৯ শতাংশ) এবং ১২৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক (৪২.৬ শতাংশ) শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন।

গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ৬৩৫ জনের ৪.৭ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর মধ্যে স্নায়ুরোগ, ১০.৫ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর মধ্যে চর্মরোগ এবং ১০.২ শতাংশের কিশোর-কিশোরীর দেহে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা গিয়েছে। এ ছাড়া, ২৯১ জন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সাধারণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮.৯ শতাংশ। পেশি এবং হাড়ের সমস্যা দেখা গিয়েছে ৫.৮ শতাংশের মধ্যে এবং স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫.৫ শতাংশ।

গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে মহিলাদের ক্ষেত্রে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ৪.৬ শতাংশ মহিলার দেহে ভ্যাকসিনের প্রভাবে ঋতুস্রাবজনিত নানা সমস্যা দেখা গিয়েছে। এ ছাড়াও ২.৭ শতাংশ মহিলার মধ্যে চোখের সমস্যা এবং ০.৬ শতাংশের মধ্যে হাইপোথাইরয়েডিজ়মের সমস্যা দেখা গিয়েছে। ০.৩ শতাংশের স্ট্রোক এবং ০.১ শতাংশের মধ্যে গিলান-বারি সিন্ড্রোম (জিবিএস) দেখা গিয়েছে। এটি এমনই একটি বিরল রোগ, যার প্রভাবে দেহ ধীরে ধীরে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন