গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
শুরুটা হয়েছিল এ রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন দাখিল পর্বে। ভাঙড়ের প্রার্থীর হোয়াটস অ্যাপে দেওয়া মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এবার সেই পথেই হোয়াটস অ্যাপে দেওয়া আইনি নোটিসকেও স্বীকৃতি দিল বম্বে হাইকোর্ট।
ক্রেডিট কার্ডের টাকা বাকি থাকায় বারবার ফোন করলেও ধরছিলেন না এক গ্রাহক। অবশেষে হোয়াটস অ্যাপে আইনি নোটিস পাঠায় স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। সেই নোটিসেরই মান্যতা দিলেন বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি গৌতম পটেল।
মুম্বইয়ের বাসিন্দা রোহিত যাদবের এসবিআই ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া ছিল প্রায় এক লক্ষ টাকা। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে বারবার তাঁকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরছিলেন না। বাধ্য হয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু বাড়ির ঠিকানায় আইনি নোটিস পাঠানো হলেও রোহিত যাদব তা গ্রহণ করছিলেন না। এমনকী, বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরছিলেন না।
আরও পড়ুন: ‘ধর্মরক্ষায় গৌরীকে গুলি’, সিটের জেরায় স্বীকারোক্তি আততায়ীর
অবশেষে বাধ্য হয়ে গত আট জুন হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে আইনি নোটিসের কপির একটি পিডিএফ ফাইল রোহিতের হোয়াটস অ্যাপে পাঠায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। সেই নোটিস যে রোহিত খুলে দেখেছেন, তার প্রমাণ মেলে ওই মেসেজিং অ্যাপে ব্লু টিক।
এর পর ওই মামলার শুনানিতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পুরো ঘটনাক্রম জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের তথ্যপ্রমাণ দাখিল করে। তাতেই বিচারপতি ওই আইনি নোটিস বৈধ বলে ঘোষণা করেন। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমেই বোঝা যাচ্ছে, আইনি নোটিস অভিযুক্তের মোবাইলে পৌঁছেছে এবং মসেজের নিচের টিক নীল রঙের হওয়ার অর্থ তিনি সেটি পড়েছেন। তাই এই আইনি নোটিস বৈধ বলে ঘোষণা করা হল। একইসঙ্গে পরবর্তী শুনানিতে ওই ব্যক্তির বাড়ির ঠিকানাও আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন, যাতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে ওই ঠিকানায় পাঠানো যায়।
আরও পড়ুন: খুশির ইদেও পাকিস্তানের গুলি, ওয়াঘায় বন্ধ মিষ্টি বিনিময়
আইন অনুযায়ী কোনও সংস্থা বা ব্যক্তিকে তাঁর ঠিকানায় সশরীরে গিয়ে বা রেজিস্টার্ড পোস্টে আইনি নোটিস পাঠানো যায়। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি আইন চালু হওয়ার পর সেই নিয়মে অনেক বদল এসেছে। স্বীকৃত হয়েছে মেসেজ এবং ই-মেল যোগাযোগ। কিন্তু
হোয়াটস অ্যাপে আইনি নোটিসের স্বীকৃতি মিলল এই প্রথম।
এ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট পর্বে একাধিকবার মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে বাধা পেয়ে অবশেষে হোয়াটস অ্যাপে মনোনয়ন জমা দেন ভাঙড়ের জমি রক্ষা কমিটি সমর্থিত ন’জন নির্দল প্রার্থী। এরপর কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন তাঁরা। শুনানিতে ওই ন’জনের মনোনয়ন বৈধ বলে জানিয়ে দেয় উচ্চ আদালত। কার্যত সেই পথেই এবার হোয়াটসঅ্যাপে আইনি নোটিসেরও স্বীকৃতি মিলল।