আজ বড় একলা ‘গাঁধীজি।’
উত্তরপ্রদেশ ভোটের ফলাফলের আগে পর্যন্ত সংসদ চালু থাকলে এই গাঁধীমূর্তির সামনেই নানা কারণে বিক্ষোভে ফেটে পড়তেন বিরোধীরা। চলত সরকারের মুন্ডুপাত। কিন্তু এখন পাঁচের মধ্যে চার রাজ্যে বিজেপি সরকার গড়ে ফেলায় আপাতত মুখে কুলুপ বিরোধীদের। চলছে সাময়িক যুদ্ধবিরতি। কংগ্রেস মাঝেমধ্যে ময়দানে নামলেও এ যাবৎ সরকারের বিরুদ্ধে টানা আন্দোলন চালিয়ে এসেছে তৃণমূল। নোট বাতিল থেকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা— নানা ইস্যুতে তৃণমূলের বিক্ষোভের সাক্ষী থেকেছেন গাঁধীজি। এমনকী বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে ভোটের ফল প্রকাশের আগে পর্যন্ত সংসদের ভিতরে বেশি হইচই না করলেও বাইরে অন্তত গাঁধীমূর্তির সামনে প্রতিবাদ আন্দোলন জারি রেখেছিল তৃণমূল। যাকে ‘লোক দেখানো প্রতিবাদ’ বলে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি সিপিএম। কিন্তু আজ সব শান্ত। এমনকী গোয়ায় বিজেপিকে সরকার গড়তে ডাকার প্রতিবাদে কংগ্রেস ও অন্য বিরোধীরা যখন ওয়াকআউট করেছে, তখনও আসনেই বসেছিলেন তৃণমূল সাংসদেরা।
আরও পড়ুন: ওঁরা এখন পালাতে চান
বাইরের ছবি ভিতরেও। দোল ও হোলির জন্য রাজ্যসভা বন্ধ থাকলেও, আজ খোলা ছিল লোকসভা। শত্রু সম্পত্তি বিল পাশই হোক বা প্রশ্নোত্তর পর্ব—বিরোধীরা ছিলেন অনেক সংযত। বিশেষ করে তৃণমূল। আজ স্টেন্ট সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন আলোচনায় স্টেন্টের দাম কমাতে কেন্দ্রের পদক্ষেপের প্রশংসা করেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, কেন্দ্র যেমন স্টেন্টের দাম কমিয়েছে, তেমনই পশ্চিমবঙ্গ বেসরকারি হাসপাতালের লুঠ রুখতে সাধারণ মানুষের স্বার্থে বিল এনেছে। তবে সৌগতবাবুর অভিযোগ, স্টেন্টের দাম কমে যাওয়ায় হাসপাতালগুলি ঘুরপথে রোগীর পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় চলছেই। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন কেন্দ্রীয় রসায়ন ও সার মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মনসুখ এল মাণ্ডবীয়। তৃণমূলের আর এক সাংসদ অর্পিতা ঘোষ সাংসদদের সঙ্গে নিয়ে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খোলার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এ ধরনের দোকান খোলায় সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। কেন্দ্রও একই পদক্ষেপ করতে পারে, যেখানে প্রত্যেক সাংসদ নিজের কেন্দ্রে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খুলতে উদ্যোগী হবেন।
তৃণমূলের এই ‘শান্ত’ অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন শুরু হয়েছে জেনে রাতে দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ছুটি থাকায় আজ রাজ্যসভার সাংসদেরা আসেননি। হোলির জন্য লোকসভার অনেক সাংসদও আসতে পারেননি। উভয় কক্ষের সব সাংসদ এলেই ফের সরকারের বিরুদ্ধে সরব হবেন তৃণমূল নেতৃত্ব।