তিন তালাক আর হজে ভর্তুকি বন্ধের পরে জমিতে এর প্রভাব মাপতে রাজ্যওয়াড়ি সফরে বেরোচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের কর্তারা। শীঘ্রই বৈঠক হবে কলকাতাতেও।
তিন তালাক বন্ধের উদ্যোগের পরে গত কাল হজে পুরোদস্তুর ভর্তুকি তুলে দেওয়ারও ঘোষণা করে কেন্দ্র। সঙ্গে প্রচার করে, বিরোধীদের মতো তোষণের রাজনীতি করে না মোদী সরকার। তাতেই ক্ষিপ্ত হন বিরোধীরা। সমস্বরে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই ভর্তুকি তুলেছে কেন্দ্র। এতেও বিরোধীদের দুষে ঢাক পেটাচ্ছে মোদী সরকার। তাদের আশা, এর ফলে সংখ্যালঘুদেরও ভোট পাওয়া যায়। অথচ অন্য দিকে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গোটা দেশ চষে বেড়াচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীও বলছেন, ভারত-ইজরায়েলের ইসলাম-বিরোধী যোগ আছে। নকভিকে লেখা এক চিঠিতে কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল বলেছেন, ‘‘হজে ভর্তুকি তুলে দিয়ে বাঁচানো টাকা সরকার শিক্ষাখাতেই খরচ করবে বলে আমাদের আশা। কী ভাবে এই টাকা খরচ করা হচ্ছে তার বিবরণও প্রকাশ করা উচিত।’’
এই অভিযোগের মুখে ভাবমূর্তি শোধরাতেই এ বারে রাজ্যওয়াড়ি সফরে বেরোচ্ছেন কেন্দ্রের কর্তারা। নকভি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্যই হল কোনও তোষণ না করে সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন করা। মন্ত্রক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি তৈরি করেছে। আগামিকাল লখনউতে তার বৈঠক হবে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও সে বৈঠকে থাকবেন। এরপরেই বৈঠক হবে কলকাতায়।’’ মন্ত্রক সূত্রের মতে, লখনউতে আগামিকালের বৈঠকে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, উত্তরাখণ্ড, দিল্লি, হিমাচল, পঞ্জাবের মতো রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকার সংখ্যালঘু মন্ত্রীরা থাকবেন। কলকাতার বৈঠকে পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির প্রতিনিধিদের সামিল করা হবে।
সংখ্যালঘু মন্ত্রক ইতিমধ্যেই যে সব প্রকল্প হাতে নিয়েছে, সেগুলির সমীক্ষা করাই এই বৈঠকের লক্ষ্য। কিন্তু আসলে এর মাধ্যমে মোদী সরকার জল মাপতে চাইছে। বিজেপির এক সূত্রের মতে, তিন তালাক বন্ধ নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগী হয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেস লোকসভায় বিলে সমর্থন দিলেও রাজ্যসভায় তার বিরোধিতা করেছে। তা নিয়ে বিজেপি প্রচার আরও তুঙ্গে নিয়ে যাবে। সে কারণে এখনই কোনও অধ্যাদেশের বদলে সংসদেই বিল পাশ করানোর ফের চেষ্টা করা হবে। যাতে কংগ্রেসের মুখোশ খোলা যায়। এর পাশাপাশি সংখ্যালঘু মন্ত্রক গত সাড়ে তিন বছরে যে সব প্রকল্প নিয়েছে সেগুলির সুফল কতটা তৃণমূল স্তরে পৌঁছেছে, তারও পর্যালোচনা হবে।
মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, সংখ্যালঘুদের জন্য নিঃশব্দে কাজ করে চলেছে সরকার। প্রায় পৌনে ২ কোটি ছাত্র-ছাত্রীকে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। ৭০ শতাংশ ড্রপ-আউট কমে গিয়েছে। কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সাড়ে ৮ লক্ষ সংখ্যালঘু যুবককে রোজগারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গেই মাদ্রাসার আধুনিকীকরণ করা হয়েছে।