দলিত সংগঠনগুলির ডাকা বন্ধেও হিংসা ছড়াল বিহারে।
কয়েকটি দলিত সংগঠনের ডাকা ভারত বন্ধে হিংসা ছড়িয়েছিল দেশে। আজ সংরক্ষণ-বিরোধীদের ডাকা বন্ধেও এড়ানো গেল না রক্তপাত। এ দিন বিহারে গোলমালে জখম হয়েছেন ১২ জন। দলিত এবং সংরক্ষণ-বিরোধীরা এ ভাবে পর পর মাঠে নামায় উভয় সঙ্কটে পড়েছে বিজেপি।
গত সপ্তাহে দলিত সংগঠনগুলির ডাকা বন্ধে গোলমালের প্রেক্ষিতে গত কালই রাজ্যগুলিকে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিহার, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কারণ, গত সপ্তাহের বন্ধে ওই রাজ্যগুলিতে হিংসা ছড়িয়েছিল। এ দিন দলিত সংগঠনগুলির ডাকা বন্ধে হিংসায় অভিযুক্ত ১২ জনের জামিনের আর্জিও খারিজ করেছে উত্তরপ্রদেশের একটি আদালত।
আজ অন্য রাজ্যগুলিতে তেমন গোলমাল না হলেও বিহারে হিংসা এড়ানো যায়নি। গয়া, লখিসরাই, আরা, মুজফ্ফরপুর, নওয়াদা, পটনা, বেগুসরাইয়ে রাস্তা আটকে মিছিল, বিক্ষোভ এবং ভাঙচুর চালায় বন্ধ সমর্থকেরা। আরাতে গোলমাল রুখতে পুলিশ শূন্যে গুলি চালায়। বেগুসরাইয়ের লাখো থানার ওসিকে গুলি করে বন্ধ সমর্থকেরা। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ছাপরাতে পোড়ানো হয়েছে পুলিশের গাড়ি। এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ হাজিপুরের সুভইয়ের লোভা গ্রামের কাছে মহুয়া রোডে বন্ধ সমর্থকদের বিক্ষোভের জেরে পড়েন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ প্রতিমন্ত্রী উপেন্দ্র কুশওয়াহা। তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মোতিহারি যাচ্ছিলেন। বিক্ষোভের জেরে আটকে পড়ায় যেতে পারেননি। লোকসমতা পার্টির কোষাধ্যক্ষ রাজেশ যাদবের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গাড়ি আটকে ধাক্কাধাক্কি ও গালিগালাজ করা হয়। ‘জাতিবাদী’ বলে অপমান করা হয় উপেন্দ্রকে।
এই ঘটনায় হিন্দি বলয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছে বিজেপি। আরএসএস নেতা মোহন ভাগবত গত চার বছরে বহু বার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সংবিধানে সংরক্ষণেরই বিরুদ্ধে সঙ্ঘ। এ দিকে ২ এপ্রিল দলিতদের স্বার্থ আঘাত পেয়েছে বলে ভারত বন্ধ পালিত হয়েছে। রাহুল গাঁধী গত কাল রাজঘাটের অনশনে ঘোষণা করেছেন, মোদী দলিত বিরোধী।
আজ আবার উচ্চবর্ণের হিন্দু সংগঠনগুলি দলিত সংরক্ষণের বিরুদ্ধে ভারত বন্ধ ডেকেছিল। আকস্মিক ভাবে রাজস্থানের করণী সেনা এই বন্ধ ডাকে। বিহারে রণবীর সেনা উচ্চবর্ণের পক্ষে এবং উত্তরপ্রদেশের ভীম সেনা উচ্চবর্ণের রাজনীতির বিরোধিতায় নামে। বিজেপির নিজস্ব ভোটব্যাঙ্ক বরাবর উচ্চবর্ণের হিন্দু ভোট। তবে ক্রমশ বিজেপি দলিত সমাজকেও কাছে টেনে নিয়ে হিন্দু ভোটকেও সুসংহত করার চেষ্টা করছে। ফলে জাতপাতের এই লড়াইয়ে বিপাকে প়ড়েছে নরেন্দ্র মোদীর দল।