বিজ্ঞপ্তিতে আপত্তি, ক্ষুব্ধ বরাক

শরণার্থীদের নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আপত্তি তোলায় অসমিয়া সংগঠনগুলির উপর বিরক্ত নাগরিক অধিকার রক্ষা সমিতি (সিআরপিসি)। সংগঠনের আশঙ্কা, অসম আন্দোলনের ভয়াবহ দিনগুলিকে ফিরিয়ে আনার চক্রান্ত চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:১৯
Share:

কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে আসুর মিছিল। বুধবার গুয়াহাটিতে উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।

শরণার্থীদের নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আপত্তি তোলায় অসমিয়া সংগঠনগুলির উপর বিরক্ত নাগরিক অধিকার রক্ষা সমিতি (সিআরপিসি)। সংগঠনের আশঙ্কা, অসম আন্দোলনের ভয়াবহ দিনগুলিকে ফিরিয়ে আনার চক্রান্ত চলছে।

Advertisement

২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে
ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে যাঁরা ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের এখানে থাকতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। সিআরপিসি-র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নৃপেন্দ্রচন্দ্র সাহা, প্রধান সম্পাদক সাধারণ পুরকায়স্থ ও সাধারণ সম্পাদক বিধায়ক দাস পুরকায়স্থ একে সাহসী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন।

তাঁদের কথায়— ‘বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরই রাজ্যে অস্থিরতা তৈরির চক্রান্ত শুরু হয়েছে। অসম আন্দোলনের দিনগুলিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ তবে এখন যে আর আগের মতো পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়, সে ব্যাপারে তাঁরা সবাইকে সতর্ক করে দেন। সিআরপিসি কর্মকর্তারা জানান, চক্রান্ত করেই দেশভাগের সময় শ্রীহট্টকে বিভাজিত করা হয়েছিল। বাঙালি হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টানদের কেন তার দায় ভোগ করতে হবে? অথচ এঁরাই বছরের পর বছর শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

Advertisement

তাঁদের আরও প্রশ্ন, কোনও কালের কোনও রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্তের জন্য বিরাট অংশের মানুষকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ভুগতে হবে কেন?

সংগঠনটির বক্তব্য, জওহরলাল নেহরু, মহাত্মা গাঁধী, সর্দার বল্লভভাই পটেল-সহ তৎকালীন সব নেতাই দেশভাগের বলি হয়ে আসা লোকেদের নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীরা সে কথা ভুলে থাকলেও নরেন্দ্র
মোদী পূর্বপুরুষদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন।

তবে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তিতেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা হবে না, সে কথাও তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দেন। সিআরপিসি নেতারা জানান, এ বার বিল এনে নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আইন করে নাগরিকত্ব প্রদান ছাড়া বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশিত সুফল দিতে ব্যর্থ হবে। সেই কাজ ২০১৬ সালের অসম বিধানসভা নির্বাচনের আগেই করার জন্য তাঁরা আর্জি জানান।

যাঁরা এই প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন, তাঁদের প্রতি সতর্কবার্তা শুনিয়ে বিধায়ক দাস পুরকায়স্থ বলেন, ‘‘ইতিহাসকে বিকৃত করে বেশিদিন রাখা চলে না। আসাম আন্দোলনের সময় যে ভাবে মানুষকে বাঙালিদের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলা হয়েছিল, এ বার তা সম্ভব নয়। তাই তাঁরা যদি প্রকৃতই রাজ্যের উন্নতি চান, তাহলে যেন আন্দোলনের নামে রাজ্যের বিকাশমূলক কাজকর্মকে স্তব্ধ না করেন।’’ বরং উন্নয়নের জন্য অসমিয়া, বাঙালি-সহ সমস্ত জনগোষ্ঠীর যে হাত ধরাধরি করে চলা উচিত, সে কথা সবাইকে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন