জেলাশাসকের সামনে গণবণ্টন নিয়ে বিক্ষোভ

গণবণ্টন ব্যবস্থায় অবাধ লুটের বিরুদ্ধে সরব হলেন হাইলাকান্দির মানুষ। খাদ্য ও অসামরিক সরবরাহ বিভাগ থেকে বরাদ্দ সামগ্রী বিলি-বণ্টনের ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্ধারিত মূল্য ও ওজনে কারচুপি চলছে। এর প্রতিবাদে বার বার রাস্তায় নেমেছে বিজেপি, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি।

Advertisement

অমিত দাস

হাইলাকান্দি শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৫ ০৩:০৭
Share:

গণবণ্টন ব্যবস্থায় অবাধ লুটের বিরুদ্ধে সরব হলেন হাইলাকান্দির মানুষ।

Advertisement

খাদ্য ও অসামরিক সরবরাহ বিভাগ থেকে বরাদ্দ সামগ্রী বিলি-বণ্টনের ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্ধারিত মূল্য ও ওজনে কারচুপি চলছে। এর প্রতিবাদে বার বার রাস্তায় নেমেছে বিজেপি, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি।

এ বার হাইলাকান্দিতে গণবণ্টন ব্যবস্থার বেহাল পরিস্থিতির কথা সরাসরি জনতার মুখ থেকে শুনলেন জেলাশাসক বরুণ ভুঁইয়া। গত কাল প্রশাসনের উদ্যোগে লালা শহরে একটি সচেতনতা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে এ নিয়ে মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েন উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। শ’পাঁচেক লোকের বিক্ষোভে অসন্তোষের আঁচ টের পান বরুণবাবু। তার জেরে তিনি ঘোষণা করেন— এ বার থেকে রেশনের চাল, আটা, কেরোসিন-সহ অন্য সামগ্রীর দাম ও ওজনে যাতে অনিয়ম না হয়, সে দিকে প্রশাসন নজর রাখবে। গণবণ্টন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রয়োজনে সাধারণ মানুষকে নিয়ে নজরদারি কমিটি তৈরির কথাও জানান জেলাশাসক।

Advertisement

গণবণ্টন-সহ অন্যান্য বিভাগের কাজকর্মের বিষয়ে নাগরিকদের বক্তব্য জানতে ওই সভার আয়োজন করেছিলেন জেলাশাসক। নির্ধারিত সময়ের অনেকটা পর বৈঠক শুরু হয়। তাতে আরও ক্ষুব্ধ হন সেখানে হাজির মানুষ। সবচেয়ে বেশি নালিশ ওঠে গণবণ্টন ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই। তাঁরা জানান, রেশন দোকানে সব শ্রেণির মানুষই প্রতারিত হচ্ছেন। নামমাত্রই ন্যায্য মূল্যের দোকান রয়েছে। কিন্তু সঠিক দামে সেখানে জিনিস মিলছে না। এ নিয়ে সভায় তুমুল হইহট্টগোল হয়। হাইলাকান্দি জেলা অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘‘জেলার অনেক গরিব মানুষের বিপিএল কার্ড রেশন দোকানের মালিক-কর্মীরা নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছেন। অনেক জায়গায় চাল, আটা, কেরোসিন বিতরণই করা হচ্ছে না।’’ তাঁর হিসেবে, হাইলাকান্দিতে প্রতি মাসে গণবণ্টন ব্যবস্থায় কম পক্ষে ৫০ লক্ষ টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে। কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় সম্পাদক জহিরউদ্দিন লস্কর বলেন, ‘‘এপিএল খাতে বরাদ্দ অতিরিক্ত চাল গ্রাহকদের দেওয়া হয় না। তা শেষ পর্যন্ত কোথায় যায়?’’ তিনি জানান, মে মাসে এপিএল কার্ড প্রতি মাসে চাল বরাদ্দ করা হয়েছে সাড়ে ১২ কিলোগ্রাম করে। সেই সঙ্গে কার্ড প্রতি অতিরিক্ত চাল দেওয়ার কথা আরও ৭ কিলোগ্রাম। কিন্তু অতিরিক্ত চাল গ্রাহকরা পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি মাসে জেলার জন্য লক্ষ লক্ষ লিটার কেরোসিন তেল বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু গ্রামের বাসিন্দাদের কালোবাজার থেকে ৪০ টাকা লিটার দরে তা কিনতে হচ্ছে।’’ এ নিয়ে জেলাশাসককে তদন্তের আর্জি জানান কৃষক মুক্তির ওই নেতা।

লালা পুরসভার সদস্য তপন নাথ, অনামিকা ভট্টাচার্য, মৃণালকান্তি নাথ মজুমদার জেলাশাসককে বলেন, ‘‘রেশন দোকান থেকে জিনিস কেনার পর গ্রাহকদের রসিদ দেওয়ার নির্দেশ দিতে হবে।’’

বৈঠকে গণবণ্টন নিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন জেলাশাসক। তাঁর নির্দেশে খাদ্য ও অসামরিক সরবরাহ বিভাগের পরিদর্শক জে দাস সংশ্লিষ্ট বিভাগের স্বচ্ছতার কথা বলতে চাইলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। শুরু হয় চিৎকার।

এর পরই জেলাশাসক আশ্বাস দেন— এখন থেকে হাইলাকান্দির গণবণ্টন ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘কথা দিচ্ছি, গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা করব।’’ সভায় স্বচ্ছ ভারত অভিযান, পানীয় জল, জেলার রাস্তাঘাট নিয়ে আলোচনার কথা থাকলেও, গণবণ্টন নিয়ে ঝামেলার জেরে তা করা যায়নি।

করিমগঞ্জে এনসিসি প্রধান। করিমগঞ্জে এনসিসি দফতর ঘুরে দেখলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ চক্রবর্তী। আজ দুপুরে তিনি করিমগঞ্জ পৌঁছন। স্টেশন রোডে এনসিসি দফতরে তাঁকে অভিবাদন জানায় ক্যাডাররা। সেখানে দু’টি বৃক্ষরোপণ করেন তিনি। পরে এনসিসি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কাছাড়ের মাসিমপুরে সেনাবাহিনীর অন্য আধিকারিকদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন