আইআইটি মাদ্রাজের ছাত্র সংগঠন এপিএসসিকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে আজও উত্তাল চেন্নাই ও দিল্লি। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আজ চেন্নাইয়ে আটক হয়েছেন প্রায় দু’শো ছাত্রছাত্রী। এঁরা সকলেই ডিএমকের ছাত্র সংগঠনের সদস্য। অন্য দিকে, রাজধানী দিল্লিতে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দফতরের সামনেও বিক্ষোভ দেখায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংগঠন। সকলেরই বক্তব্য, অবিলম্বে ওই ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিক আইআইটি মাদ্রাজ কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি এপিএসসিকে বাতিল ঘোষণা করেন আইআইটি মাদ্রাজ কর্তৃপক্ষ। ওই ছাত্র সংগঠনটির বক্তব্য, মোদী সরকারের কিছু নীতির সমালোচনা করে একটি আলোচনা-সভার আয়োজন করেছিল তারা। আইআইটি কর্তৃপক্ষের কানে সে খবর যেতেই তড়িঘড়ি তাদের নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এপিএসসির আরও অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে তাদের নামে একটি বেনামি চিঠি গিয়েছিল। সেখানে বলা ছিল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছে এপিএসসি। আর মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের পাল্টা চিঠি পেয়েই তাদের নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন আইআইটি মাদ্রাজ কর্তৃপক্ষ। তবে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিন অব স্টুডেন্টস আগেই জানিয়েছেন, নির্দেশিকা লঙ্ঘনের জন্যই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ছাত্র সংগঠনের বাক্-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার কোনও উদ্দেশ্যই তাঁদের নেই। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও বিষয়টির সঙ্গে নিজেকে জড়াতে রাজি হননি। তিনি জানিয়েছেন, একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওই সিদ্ধান্তে তাঁর মন্ত্রকের কোনও হাত নেই।
তবে এ সব কিছু মানতে নারাজ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলি। তাদের অভিযোগ, সরকার-বিরোধী মন্তব্যের জন্যই এ ভাবে বাক্ স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি আশুতোষ কুমার বলেন, ‘‘মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ওই সংগঠন নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন? সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার অধিকার কি ছাত্র সংগঠনের নেই? এপিএসসির পাশে আছি আমরা। আর তাই এই আন্দোলন।’’ বিষয়টি নিয়ে আজ সরব হয়েছেন আরপিআই নেতা রামদাস আতওয়ালেও। মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকারের জোট সঙ্গী আরপিআই। কিন্তু আতওয়ালও বিষয়টি নিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। স্মৃতি ইরানির সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। শিক্ষার গৈরিকীরণ নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারকে পরোক্ষে আজ দুষেছেন আতওয়াল।