National News

এ বার ট্রেন ধরতে পৌঁছতে হবে ১৫-২০ মিনিট আগে! স্টেশন হচ্ছে বিমান বন্দরের মতো ‘নিশ্ছিদ্র’

আরপিএফ সূত্রে খবর, তালিকায় থাকা স্টেশনগুলিকে নিশ্ছিদ্র করে ফেলা হবে। পরিকাঠামো তৈরি হবে বিমানবন্দরের মতো, যাতে অবাঞ্ছিত এক জন ব্যক্তিও ভিতরে ঢুকতে না পারেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ১৮:০০
Share:

এ বার বিমান বন্দরের মতো নিশ্ছিদ্র হচ্ছে রেল স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। —ফাইল চিত্র

এ বার বিমানবন্দরের মতোই ‘সিল’ বা ‘নিশ্ছিদ্র’করে দেওয়া হবে রেল স্টেশন। ভিতরে ঢুকতে পারবেন না অবাঞ্ছিত কেউ। ট্রেন ধরতে স্টেশনে পৌঁছতে হবে ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে। ওই সময় রাখা হবে চেকিংয়ের জন্য। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্ছিদ্র করতে সারা দেশের দুই শতাধিক স্টেশনে বাস্তবায়নের পথে ভারতীয় রেলের এই পরিকল্পনা। পরীক্ষামূলক ভাবে ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে প্রটেকশন ফোর্স-এর (আরপিএফ) ডিরেক্টর জেনারেল অরুণ কুমার। পুরো ব্যবস্থা চালু হয়ে গেলে যাত্রীদের বিমানবন্দরের মতোই একাধিক চেকিংয়ের পর উঠতে হবে ট্রেনে।

Advertisement

অরুণ কুমার জানিয়েছেন, কুম্ভ মেলার কথা মাথায় ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ স্টেশনে পরীক্ষামূলক ভাবে এই ব্যবস্থা চালু করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও ২০২টি স্টেশনে এই ব্যবস্থা চালুর জন্য প্রায় প্রস্তুত। এই স্টেশনগুলির আরও কিছু পরিকাঠামোগত বিষয় খতিয়ে দেখে তার পর চূড়ান্ত পর্বে সিল করার কাজ শুরু হবে।

কেমন হবে সেই ব্যবস্থা? আরপিএফ সূত্রে খবর, তালিকায় থাকা স্টেশনগুলিকে নিশ্ছিদ্র করে ফেলা হবে। পরিকাঠামো তৈরি হবে বিমানবন্দরের মতো, যাতে অবাঞ্ছিত এক জন ব্যক্তিও ভিতরে ঢুকতে না পারেন। যাত্রীদের স্টেশনে ঢোকা থেকে শুরু করে ট্রেনে ওঠা পর্যন্ত একাধিকবার বিভিন্ন রকম চেকিং ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। তার জন্য ১৫-২০ মিনিট আগে স্টেশনে পৌঁছে নির্দিষ্ট জায়গায় যেতে হবে। তার পরে এলে আর কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এই অতিরিক্ত সময় যাত্রীদের চেকিংয়ের জন্য রাখা হবে।

Advertisement

আরও পডু়ন: রাতের কলকাতায় শাটল কারে নির্জন রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা মহিলাকে

নয়া ব্যবস্থায় প্রযুক্তিতেও আমূল পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা রয়েছে। স্ক্যানিং এবং ম্যানুয়াল চেকিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে লাগেজের জন্য। এছাড়া ‘ফেস রিকগনিশন’ ক্যামেরা থাকবে। তাতে নিরন্তর মনিটর করবে আরপিএফ। কোনও দাগী দুষ্কৃতী বা সন্দেহভাজন কেউ স্টেশনে ঢুকলেই আলাদা সতর্কবার্তা যাবে আরপিএফ কন্ট্রোল রুমে। তার পর সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে রেল নিরাপত্তা বাহিনী। এছাড়া বম্ব ডিটেকশন এবং ডিফিউজাল পদ্ধতিও থাকবে নয়া ব্যবস্থায়। যাত্রীদের তল্লাশি, লাগেজ চেকিং এবং যান্ত্রিক নজরদারির এই ব্যবস্থাকে বলা হচ্ছে ইন্টিগ্রেটেড সিকিওরিটি সিস্টেম (আইএসএস) বা সঙ্ঘবদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনের ভিতরে যাত্রী এবং সম্পত্তির নিরাপত্তার দায়িত্ব আরপিএফ-এর। সেই কথা মাথায় রেল স্টেশনকে বিমানবন্দরের মতো করে গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। আরপিএফ-এর ডিজি অরুণ কুমার বলেন, ‘‘উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তি ব্যবহার করে রেল স্টেশনকে নিশ্ছিদ্র করতেই এই পরিকল্পনা। এবার সিদ্ধান্ত নিতে হবে, স্টেশনের কতগুলি গেট দেওয়াল তুলে পুরোপুরি সিল করে দেওয়া হবে। বাকিগুলির কোনওটিতে আরপিএফ কর্মীরা থাকবেন, কোনওটিতে বসবে কোলাপসিবল গেট।’’

আরও পডু়ন: দিলীপের মমতা-স্তুতিতে স্তম্ভিত গোটা দল, তোলপাড় শুরু বিজেপিতে

কিন্তু হাওড়া-শিয়ালদহ বা মুম্বইয়ের মতো স্টেশনে, যেখানে দিনে লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন, এবং যেখানে প্রতিদিন প্রচুর লোকাল ট্রেন যাতায়াত করে, সেখানে এই ব্যবস্থা চালু করা কতটা বাস্তব সম্মত। এত বিপুল সংখ্যক যাত্রীকে বিমান বন্দরের মতো চেকিং ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাওয়া কি আদৌ সম্ভব? তা ছাড়া এর জন্য বিপুল সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজনও হবে আরপিএফ-এর। অরুণ কুমার বলেন, ‘‘চেকিংয়ের এই পদ্ধতির অধিকাংশটাই করা হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে। ফলে কর্মীর প্রয়োজন আরও কমবে।’’

২০১৬ সালে ২০৩টি স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজার প্রস্তাবে সায় দেয় রেল। প্রকল্পের আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ৩৮৫ কোটি টাকা।তার পর গত তিন বছরে এই স্টেশনগুলির পরিকাঠামো ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছে আরপিএফ। এবার ধীরে ধীরে তা কার্যকর করার ব্যবস্থা করা হবে। জানিয়েছেন অরুণ কুমার।

(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন