প্রচারে নেলি গণহত্যা জুড়ল এআইইউডিএফ

৩৩ বছর আগের গণহত্যাকে ‘তুরুপের তাস’ করে ভোট ময়দানে নামল এআইইউডিএফ। দলের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’-এ নেলি হত্যাকাণ্ডকে তুলে ধরে এআইইউডিএফের দাবি— ওই সময় থেকে রাজ্যে সংখ্যালঘুদের উপরে যে অত্যাচার শুরু হয়েছে, তা এখনও চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৬ ০১:৩১
Share:

৩৩ বছর আগের গণহত্যাকে ‘তুরুপের তাস’ করে ভোট ময়দানে নামল এআইইউডিএফ।

Advertisement

দলের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’-এ নেলি হত্যাকাণ্ডকে তুলে ধরে এআইইউডিএফের দাবি— ওই সময় থেকে রাজ্যে সংখ্যালঘুদের উপরে যে অত্যাচার শুরু হয়েছে, তা এখনও চলছে। ক্ষমতায় না এলে অত্যাচার বন্ধ হবে না। ৫৫-পাতার ‘ভিশন ডকুমেন্টে’ অসমে অনুন্নয়ন, আইন-শৃঙ্খলা অবনতির জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছে এআইইউডিএফ। শুধু নেলি হত্যাকাণ্ডই নয়, বড়োভূমিতে কয়েক দফার গোষ্ঠী সংঘর্ষ নিয়েও কংগ্রেসের দিকে তোপ দেগেছে এআইইউডিএফ। দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, কংগ্রেস হামলাকারীদের আড়াল করছে। নিপীড়িতদের রক্ষার কোনও চেষ্টা করেনি।

দলের কার্যবাহী সভাপতি আদিত্য লাংথাসা জানান, ১৯৮৩ সালে নেলির ১৪টি গ্রামে ৩৭১ শিশু-সহ দুই সহস্রাধিক মানুষকে বাংলাদেশি সন্দেহে খুন করা হয়। সেই ঘটনা নিয়ে পুলিশ ৩৮৯টি চার্জশিট দিলেও, সব মামলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এত বড় গণহত্যার তদন্ত হলে অনেক কথা জানা যেত। বড়োভূমিতেও কয়েক হাজার সংখ্যালঘু ও আদিবাসীকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু কারও সাজা হয়নি। সংখ্যালঘুদের বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করার ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেন এআইইউডিএফ নেতারা। লাংথাসা বলেন, ‘‘বিদেশি শনাক্তকরণ আদালতে যে মামলাগুলি উঠেছে, তার মধ্যে ৯৬.৪ শতাংশ ব্যক্তিই ভারতীয় বলে গণ্য হয়েছেন। বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হন মাত্র ৩.৬ শতাংশ লোক।’’ দলের ‘ভিশন ডকুমেন্টে’ অবশ্য অসম চুক্তি রূপায়ণ ও অবৈধ বিদেশি বহিষ্কারের বিষয় উল্লেখ করা হয়নি।

Advertisement

লাংথাসার দাবি, বন্যা ও ভূমিক্ষয়ের সমস্যায় জর্জরিত পরিবারগুলির জন্যেও রাজ্য সরকার কিছু করেনি। এআইইউডিএফ ক্ষমতায় এলে ওই সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে ঘোষণার জন্য লড়াই চালাবে। ভূমিক্ষয় রোধেও বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ করবে। বৃহৎ নদীবাঁধ গড়ার বিরুদ্ধেও সরব হন লাংথাসা। বিজেপি কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে, তারা কেন্দ্রের পাঠানো এক লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকার হিসেব দেয়নি। লাংথাসার প্রশ্ন, এত টাকা নয়ছয় হলেও কেন্দ্র কেন তা নিয়ে সিবিআই তদন্ত করাচ্ছে না? ‘ভিশন ডকুমেন্টে’ সারদা ও লুই বার্জার কেলেঙ্কারিতে জড়িত বলে হিমন্তবিশ্ব শর্মার সমালোচনাও করা হয়েছে। নির্বাচনের পরে কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবেন কি না— সেই প্রশ্ন এড়িয়ে লাংথাসা বলেন, ‘‘কোনও দলই আমাদের সাহায্য ছাড়া রাজ্যে সরকার গড়তে পারবে না।’’

আজমলের দলের তিন নেতা কংগ্রেসে। ভোটের মুখে দলবদল চলছে ডিমা হাসাও জেলায়। এ বার এআইইউডিএফ-এর জেলা সভাপতি-সহ তিন জন কংগ্রেসে যোগ দিলেন। আজ এআইইউডিএফ জেলা সভাপতি গিনথাং সন্তাক ও দলীয় নেতা সামথং ফাইরিয়েম, লালঙ্গাম বাপুই কংগ্রেসে যোগ দেন। হাফলং রাজীব ভবনে জেলা কংগ্রেস সভাপতি মহেন্দ্র কেম্প্রাই, সহ-সভাপতি রুদ্রজিৎ লাইস্রাম, পার্বত্য পরিষদের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ তথা কংগ্রেস নেতা তুষারকান্তি দেব ও দিনেন থাওসেনের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁরা নতুন দলের পতাকা হাতে তুলে নেন।

জেলা কংগ্রেস সভাপতি মহেন্দ্র কেম্প্রাই বলেন, ‘‘ওই তিন নেতা আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসের শক্তি আরও বাড়ল।’’ মহেন্দ্রবাবু জানান, ওই তিন নেতা প্রথমে কংগ্রেসরই সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরে দল ছেড়ে এআইএফডিএফে যোগ দিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement