সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে তৈরি অখিলেশ 

লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে জোট নিয়ে শনিবার দিল্লিতে বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর সঙ্গে অখিলেশের বৈঠক হয়। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও সমাজবাদী পার্টির তরফে জানানো হয়, জোটের অঙ্ক প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত কালই পুরনো এক বেআইনি বালি খাদানের মামলা নিয়ে সক্রিয় হয় সিবিআই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৪
Share:

সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে তিনি তৈরি বলে জানিয়ে দিলেন অখিলেশ যাদব।—ফাইল চিত্র।

বেআইনি বালি খাদান সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে তিনি তৈরি বলে জানিয়ে দিলেন অখিলেশ যাদব। পাশাপাশি সমাজবাদী পার্টির (এসপি) প্রধানের দাবি, মানুষ বিজেপিকে জবাব দিতে তৈরি।

Advertisement

লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে জোট নিয়ে শনিবার দিল্লিতে বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর সঙ্গে অখিলেশের বৈঠক হয়। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও সমাজবাদী পার্টির তরফে জানানো হয়, জোটের অঙ্ক প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গত কালই পুরনো এক বেআইনি বালি খাদানের মামলা নিয়ে সক্রিয় হয় সিবিআই। ওই মামলায় অখিলেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি। নরেন্দ্র মোদী সরকার মায়াবতীর মতোই অখিলেশকে সিবিআই জুজু দেখিয়ে জোট ভাঙতে চাইছে বলে দাবি বিরোধীদের।

আজ লখনউয়ে অখিলেশ বলেন, ‘‘সমাজবাদী পার্টি লোকসভা ভোটে সবচেয়ে বেশি আসন জেতার চেষ্টা করছে। যারা সেই চেষ্টায় বাধা দিচ্ছে তাদের হাতে সিবিআই রয়েছে। কিন্তু আমাদের হাতে মহাজোট রয়েছে। মানুষ বিজেপিকে জবাব দেবেন।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘এক বার কংগ্রেস আমাদের সঙ্গে সিবিআইয়ের দেখা হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিল। এ বার বিজেপি সেই সুযোগ দিচ্ছে। তবে বিজেপির জানা উচিত তারা যে সংস্কৃতি তৈরি করছে তা ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হতে পারে।’’ অখিলেশের আরও কটাক্ষ, ‘‘হয়তো সিবিআইকে বলতে হবে যে মহাজোটে কাকে কত আসনে লড়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে বিজেপি তাদের আসল চেহারা দেখিয়ে দেওয়ায় আমি খুশি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মহাজোট নিয়ে আজ কথা তেজস্বীর বাড়িতে

তবে বিজেপির পাল্টা দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্ত হচ্ছে। তাই বিজেপি সরকারের হস্তক্ষেপের প্রশ্ন নেই। অখিলেশের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত হওয়া উচিত। আজ এ নিয়ে দলের বক্তব্য জানানোর জন্য উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে উড়িয়ে আনা হয় রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিংহকে। তিনি বলেন, ‘‘এসপি-বিএসপি নিজেদের অস্তিত্ব বা়ঁচানোর লড়াই করছে। প্রতিবন্ধীরই অন্যের লাঠির উপরে ভর দিয়ে চলার প্রয়োজন হয়। কেউ যদি সরকারি টাকা লুট করেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ হবেই।’’ সিদ্ধার্থনাথের দাবি, অখিলেশ জমানায় খনিজ পদার্থ লুটের কারবার রমরম করে চলেছে। এ জন্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে জবাবদিহি করতে হবে।

আরও পড়ুন: জেটলির মন্ত্রক থেকে গাঁধীদের সাহায্য? আয়কর নির্দেশ রদ করতে বলল খোদ প্রধানমন্ত্রীর অফিস

আজ এ নিয়ে অখিলেশের পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস। দলীয় মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার দমননীতি নিয়ে চলছে। এই সরকার বেশি দিন টিকবে না।’’

রাজনীতিকদের মতে, অখিলেশের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের সম্ভাবনায় বিরোধী ঐক্য আরও শক্তিশালী হচ্ছে। কিন্তু এ দিন কংগ্রেস জমানায় তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের কথা বলে রাহুল গাঁধীর দলকেও খোঁচা দিয়েছেন অখিলেশ।

সমাজবাদী সূত্রের মতে, উত্তরপ্রদেশের জোটে মায়াবতীকে রাখতে কংগ্রেসের সঙ্গে খুব বেশি ঘনিষ্ঠতা দেখাতে রাজি নন অখিলেশ। বস্তুত মায়াবতীর সঙ্গে জোট নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হতে পারে বলে এ দিন জানিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি। ফলে সিবিআই নিয়ে কংগ্রেসকে খোঁচা সেই কৌশলের অঙ্গ হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। কংগ্রেসের নেতাদের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মধ্যপ্রদেশেও ভোটের আগে কংগ্রেসের সঙ্গে এসপি-বিএসপির জোট হয়নি। কিন্তু ভোটের পরে ওই দুই দল কংগ্রেসকে সমর্থন করেছিল। কারণ, মূল লক্ষ্য বিজেপিকে হারানো। কংগ্রেসের নেতারা জানিয়েছেন, এসপি-বিএসপি জোটে কংগ্রেসের স্থান না হলে কিছু আসনে প্রার্থী দেবেন তাঁরা। উচ্চবর্ণের ভোট কেটে বিজেপিকে বিপাকে ফেলার কৌশল নেওয়া হবে। কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারির বক্তব্য, ‘‘জোট নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। কোনও দলের সূত্র উদ্ধৃত করে কী বলা হচ্ছে তা নিয়ে মন্তব্য করা যায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন