লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় সংবিধানে বাক্স্বাধীনতা বা মত প্রকাশের স্বাধীনতা স্বীকৃত। কিন্তু সেই যুক্তি দেখিয়ে কেউ দেশের সেনাবাহিনীর বদনাম করতে পারেন না। একটি মামলায় এমনটাই মন্তব্য করল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। ভর্ৎসনা করা হল কংগ্রেস নেতা তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে। তাঁর একটি মন্তব্যে সেনাবাহিনীকে অসম্মান করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই সংক্রান্ত মামলায় লখনউয়ের আদালত রাহুলকে সমন পাঠিয়েছিল। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাহুল। কিন্তু তাঁর আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ চলাকালীন রাজস্থান থেকে ভারতীয় সেনার বিষয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন রাহুল, যা নিয়ে পরবর্তী সময়ে বিস্তর বিতর্ক হয়। মানহানির মামলা করা হয় রাহুলের বিরুদ্ধে। নিম্ন আদালত সেই মামলায় তাঁকে সমন পাঠিয়েছিল। ইলাহাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ওই সমনকে বাতিল করার আবেদন জানান রাহুল। তাঁর আবেদন খারিজ করে বুধবার আদালত বলেছে, ‘‘ভারতীয় সংবিধানের ১৯(১)(এ) ধারায় বাক্ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এই স্বাধীনতায় যুক্তিসঙ্গত কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি অসম্মানজনক মন্তব্যের স্বাধীনতা দেওয়া হয়নি সংবিধানে।’’
কী বলেছিলেন রাহুল?
২০২২ সালে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ চলাকালীন রাজস্থানের একটি সাংবাদিক বৈঠক থেকে অরুণাচল প্রদেশে ভারত এবং চিনা বাহিনীর সংঘাতের প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। বলেন, ‘‘ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে, অশোক গহলৌত, সচিন পাইলটকে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। অনেক প্রশ্ন করা হচ্ছে। কিন্তু চিন যে অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় ভূখণ্ডের দু’হাজার বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত দখল করে নিয়েছে, ভারতের ২০ জন জওয়ানকে হত্যা করেছে, তা নিয়ে কেউ কোনও প্রশ্ন করছে না। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এ বিষয়ে প্রশ্ন করছে না। এটা কি সত্য নয়? দেশ এ সব দেখছে। মানুষ কিছু জানে না, এটা ভাবার কারণ নেই।’’ রাহুলের এই মন্তব্যের পর বিতর্ক শুরু হয়। বিজেপি বলতে শুরু করে, সেনাবাহিনীকে অপমান করছেন রাহুল। প্রশ্ন তুলছেন ভারতীয় সেনার ক্ষমতা নিয়ে। এর পরেই উত্তরপ্রদেশে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়।