স্বাধীনতা দিবসে ‘জনগণমন’ গাওয়া চলবে না। এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি করল ইলাহাবাদের একটি বেসরকারি স্কুল। স্কুল কর্তৃপক্ষ ফতোয়া জারি করেছে, ওই দিন স্কুলে কোনও ছাত্রছাত্রী, এমনকী শিক্ষকরাও ‘জনগণমন’ এবং সরস্বতী বন্দনা গাইতে পারবেন না। কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশে বেজায় চটেছেন শিক্ষকরা। তীব্র প্রতিবাদ করে কাজ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন আট শিক্ষিক-শিক্ষিকা।
কেন এই ধরনের ফতোয়া?
স্কুল কর্তৃপক্ষের যুক্তি, জাতীয় স্তোত্র ইসলাম বিরোধী। তাই কোনও ভাবেই স্কুলে তা গাওয়া যাবে না। দু’টি স্কুল রয়েছে কর্তৃপক্ষের। সাইদাবাদের যে স্কুলে এই ফতোয়া জারি করা হয়েছে সেখানে মোট ৩৩০ জন পড়ুয়া রয়েছে। শিক্ষকের সংখ্যা ২০। কেন এই ধরনের ফতোয়া তা জানতে চেয়ে স্কুল ম্যানেজারের দ্বারস্থ হন শিক্ষকরা। কিন্তু তিনি তাঁর সিদ্ধান্তেই অনড় থাকেন বলে অভিযোগ। তার পরই শিক্ষকেরা একযোগে কাজ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
স্কুলের অধ্যক্ষ ঋতু শুক্ল বলেন, “স্বাধীনতা দিবসের জন্য অনুষ্ঠানের সব ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছিল। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর জাতীয় স্তোত্র গাওয়ার কথা ছিল। এমনকী সরস্বতী বন্দনার বিষয়টিও রাখা হয়েছিল ওই অনুষ্ঠানে। কিন্তু বৃহস্পতিবার স্কুলের ম্যানেজার জিয়া-উল-হক আমাদের ডেকে বলেন এ সব কোনও ভাবেই স্কুলে করতে দেওয়া হবে না।” তাঁর অভিযোগ, ম্যানেজার বলেন সরস্বতী বন্দনা এবং ‘জনগণমন’ তাঁদের ধর্মবিরোধী।
এই কথা শুনে অধ্যক্ষ-সহ সব শিক্ষকরা তীব্র প্রতিবাদ করেন। পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে ম্যানেজার জানান, যাঁরা তাঁর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাবেন তাঁদের সবাইকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হবে।
কেন ম্যানেজার জাতীয় স্তোত্রের উপর ফতোয়া জারি করলেন?
এই প্রশ্ন করায় জিয়া-উল-হকের সাফ জবাব, “জাতীয় স্তোত্রে একটি লাইনে আপত্তি আছে। তা হল ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা’। ভারত আমাদের ভগবান নয়, আমাদের ভাগ্যের বিধাতা নয়। আল্লা-ই পারে আমাদের ভবিষ্যতকে বদলে দিতে। আর কেউ নয়।”
উত্তরপ্রদেশের প্রাথমিক শিক্ষা আধিকারিক জয়কিরণ যাদব বলেন, “কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষ এ রকম ফতোয়া জারি করতে পারেন না। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও খবর...
পূর্ব ভারতে নেতা বদল মাওবাদীদের