টেলিকমে দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ কংগ্রেসের

এত দিন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির দুর্নীতি খুঁজে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে হচ্ছিল কংগ্রেসকে। হন্যে হয়ে খুঁজে এ বারে সরাসরি মোদী সরকারের এক দুর্নীতির গন্ধ খুঁজে পেয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৪:০৩
Share:

এত দিন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির দুর্নীতি খুঁজে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে হচ্ছিল কংগ্রেসকে। হন্যে হয়ে খুঁজে এ বারে সরাসরি মোদী সরকারের এক দুর্নীতির গন্ধ খুঁজে পেয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস।

Advertisement

মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের অভিযোগ, দুর্নীতি হয়েছে টেলিকম মন্ত্রকে। যে মন্ত্রকের মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদকে দু’দিন আগেই সরিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অভিযোগ, এই দুর্নীতির পরিমাণ কম করে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। যেটি সঠিক ভাবে হিসেব কষলে এক লক্ষ কোটি টাকার বেশিও হতে পারে। ইউপিএ জমানায় এ ভাবে টু-জি, থ্রি-জি দুর্নীতি নিয়ে শোরগোল করেই মনমোহন সিংহ সরকারকে উৎখাত করেছিল বিজেপি। আজ থেকে ঠিক একই ভাবে সেই প্রস্তুতি শুরু করেছে কংগ্রেস। তারা হাতিয়ার করছে সিএজির একটি রিপোর্টকে। সিএজির রিপোর্টগুলিকে তুলে ধরেই একসময় বিজেপি কংগ্রেসের তুলোধনা করত।

কংগ্রেসের অভিযোগটি কী?

Advertisement

আজ দিল্লিতে এআইসিসি সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে রণদীপ সুরজেওয়ালা, প্রাক্তন মন্ত্রী আর পি এন সিংহ ও গুজরাতের কংগ্রেস নেতা শক্তিসিন গহিল বলেন, ৬ টি টেলিকম সংস্থার থেকে বকেয়া টাকা আদায় করছে না মোদী সরকার। কংগ্রেসের যুক্তি, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন এনডিএ সরকার নতুন টেলিকম নীতি নিয়ে আসে। সেই নীতি অনুসারে টেলিকম সংস্থাগুলি থেকে লাইসেন্স ফি আদায় করার কথা বলা হয়েছিল। পরে সরকার এককালীন মাফ করে দেয়। কিন্তু ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ৬ টি টেলিকম সংস্থার থেকে সেই ফি আদায় করা হয়নি। আদালতের নির্দেশে সিএজি এই সংস্থাগুলির অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ৬ টি সংস্থা নিজেদের আয় ৪৫ হাজার কোটি টাকা কম দেখিয়েছে। যার থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা। এ বছরের মার্চ মাসে সেই রিপোর্ট পেশ হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা আদায় না করে টেলিকম মন্ত্রক আর একটি অডিট করার কাজে নেমেছে।

কংগ্রেসের অভিযোগ, যেখানে সিএজি ৬ টি সংস্থার অডিট করে ফেলেছে, তার পরে নতুন করে অডিট করার অর্থই হল সংস্থাগুলিকে ছাড় দেওয়ার চেষ্টা। রণদীপ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মুখে বলেন, না খায়ুঙ্গা, না খানে দুঙ্গা (খাবও না, খেতেও দেব না), কিন্তু নিজে পুঁজিপতিদের ছাড় দিয়ে বড়সড় দুর্নীতি করছেন। শুধুমাত্র চার বছরের বকেয়া সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সবক’টি বছর গুনলে এই অঙ্ক ১ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।’’ প্রধানমন্ত্রী এখন বিদেশে। কিন্তু সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় নড়েচড়ে বসেছে টেলিকম মন্ত্রক। গোটা বিষয়টি নিয়ে তড়িঘড়ি বৈঠক করে একটি বিবৃতিও জারি করা হয়েছে। টেলিকম মন্ত্রকের বক্তব্য হল, সরকারের কাছে রাজস্ব আদায় সর্বাধিক অগ্রাধিকার। যে অর্থ বকেয়া রয়েছে, তার সুদ, জরিমানা সহ আদায় করা হবে। সরকারের কোনও রাজস্ব ঘাটতি হবে না। সদ্য জুন মাসের মাঝামাঝি টেলিকম মন্ত্রক সিএজির রিপোর্ট হাতে পেয়েছে। ৬ টি টেলিকম সংস্থার চার বছরের বকেয়ার বিষয়টি এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন