পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট বাঁধাকে ঘিরে কার্যত ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস। তাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ক্রমেই প্রকাশ্যে আসছে। একদিকে সুদীপ রায়বর্মনের নেতৃত্বাধীন বিধায়ক ও দলীয় নেতারা, অন্য দিকে আছেন প্রদেশ সভাপতি বীরজিত সিন্হা।
পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ফলের উপরে ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটা নির্ভরশীল। তবে ভাঙনের জমি প্রায় তৈরি। সাম্প্রতিক বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলকে ঘিরেই কংগ্রেসে বিক্ষোভের শুরু। অমরপুর উপনির্বাচনে কংগ্রেস বিজয়ী সিপিএমের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর জায়গা থেকে ছিটকে চতুর্থ স্থানে নেমে যান। কংগ্রেস প্রার্থীর জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়। এর পরেই কংগ্রেস নেতারা বোঝেন, পশ্চিমবঙ্গের জোট-রাজনীতি তাঁদের অস্তিত্বের সঙ্কটে ফেলেছে। তাই মুখ খোলেন বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায়বর্মন ও তাঁর অনুগামীরা। দিল্লির দলীয় হাইকম্যান্ডের কাছে জোট নিয়ে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি তাঁরা তাঁদের রণকৌশলও তৈরি করতে শুরু করেন। তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। সুদীপবাবু বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে বিরোধী দলনেতার পদ থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর অনুগামী ছয় বিধায়কদলের বিভিন্ন পদ থেকে ইস্তফা দেন। উল্লেখ্য ৬০ সদস্যের রাজ্য বিধানসভায় প্রধান বিরোধী কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ১০। ইস্তফা দেন প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি সুশান্ত চৌধুরীও।
কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়ে নতুন বিরোধী দলনেতার নিযুক্তিকে ঘিরে। প্রদেশ সভাপতি তাঁর ঘনিষ্ঠ গোপাল রায়কে পরিষদীয় নেতা মনোনীত করে তাঁকেই বিরোধী দলনেতার মর্যাদা দেওয়ার জন্য স্পিকারকে চিঠি দেন। সুদীপবাবু-সহ ছয় বিক্ষুব্ধ বিধায়ক গোপালবাবুর নিযুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে স্পিকারকে চিঠি দেন। ফলে বিষয়টি ত্রিশঙ্কু অবস্থায়। এখন প্রদেশ সভাপতি বীরজিত সিন্হার গোষ্ঠীও সুদীপবাবুদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।