মন্ত্রিসভা রদবদলে সক্রিয় অমিত, ভাগবত

সরসঙ্ঘচালক রাজধানীতে আসেননি বটে। কিন্তু এ বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলের নেপথ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়া আর কারও যদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থেকে থাকে, তবে তিনি নাগপুরের ব্রাহ্মণ নেতা মোহন ভাগবত।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:৫১
Share:

সরসঙ্ঘচালক রাজধানীতে আসেননি বটে। কিন্তু এ বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলের নেপথ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়া আর কারও যদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থেকে থাকে, তবে তিনি নাগপুরের ব্রাহ্মণ নেতা মোহন ভাগবত।

Advertisement

মোদীর সরকারের সঙ্গে আরএসএসের সম্পর্ক রক্ষার আনুষ্ঠানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন উত্তরপ্রদেশের সঙ্ঘ নেতা কৃষ্ণগোপাল। তিনি গত কয়েক সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বেশ কয়েক বার দেখা করেছেন। মন্ত্রিসভার বদলের ক্ষেত্রে সঙ্ঘের পছন্দের তালিকাও তুলে দিয়েছেন মোদীর হাতে। মোহন ভাগবত এবং প্রধানমন্ত্রী ছাড়া বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় ছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

আজ সারাদিন ধরে বিজেপি সভাপতি ছিলেন খুব ব্যস্ত। ১১ নম্বর আকবর রোডে তাঁর বাসভবনের সামনে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছে টিভি চ্যানেলের ওবি ভ্যান। এক এক করে হাজির হচ্ছিলেন বিজেপি-র নেতারা। দলীয় সূত্রে খবর, যাঁরা মন্ত্রী হবেন তাঁদেরই নাকি ডাকা হয়েছিল। যাঁরা ডাক পাননি তাঁরা ইচ্ছে করলেও অমিত শাহের বাড়িতে আসতে পারেননি। আবার দলেও বদল হবে। কোনও কোনও মন্ত্রীকে দলের কাজে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে খবর।

Advertisement

মোদী যখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন তখন গুজরাত ভবনে সকাল থেকে সম্ভাব্য মন্ত্রীদের ডাক পড়েছিল। এ বার ডাকার কাজটি করেছেন অমিত শাহ। বিজেপি সূত্রের মতে, প্রধানমন্ত্রী দেখাতে চেয়েছেন দল ও সঙ্ঘ পরিবার, দু’পক্ষের মতকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অনেকটা আলিমুদ্দিন স্ট্রিট যে ভাবে এক সময়ে মন্ত্রী ঠিক করত।

তবে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের মন্ত্রিসভা গঠনের সঙ্গে এখানে একটা বিরাট পার্থক্য আছে। সিপিএমের ক্ষেত্রে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর ইচ্ছে অনিচ্ছের বিশেষ গুরুত্ব ছিল। কিন্তু পাশাপাশি প্রমোদ দাশগুপ্ত থেকে অনিল বিশ্বাসের মতো নেতারা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতেন।

মোদী সঙ্ঘকে খুশি রাখছেন ঠিকই। কিন্তু মন্ত্রিসভার রদবদলে এখনও তিনি শেষ কথা। কার্যত পুরো প্রক্রিয়ায় মোদীর ‘চিফ অপারেশনাল অফিসার’ হিসেবে কাজ করছেন অমিত। মাঝে মাঝে অরুণ জেটলিরও পরামর্শ নিচ্ছেন মোদী। তবে দলীয় সূত্র জানাচ্ছে, জেটলির মত খুব বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে না। জেটলির নাপসন্দ হলেও রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বা নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। ঠিক সে ভাবে এ ক্ষেত্রেও সুষমা স্বরাজের ঘনিষ্ঠ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া, বিজয় গয়ালের নামও বিবেচনা করা হচ্ছে।

অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়ে লালকৃষ্ণ আডবাণী, যশবন্ত সিন্হা, যশোবন্ত সিংহেরা মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে মত দিতে পারতেন। আবার মনমোহন সিংহের সময়ে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় চরিত্র হতেন সনিয়া গাঁধী ও তাঁর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেল। প্রণব মুখোপাধ্যায়, পি চিদম্বরমদের মতো প্রবীণ নেতাদের মতও নেওয়া হতো।

কিন্তু মোদী জমানায় গোপনীয়তা অসাধারণ বলে মানছেন সকলেই। মোদী ও অমিত ছাড়া কেউ জানেন না আগামিকাল কী হবে। বিজেপির মাঝারি স্তরের নেতারা একে অপরের কাছে জানতে চাইছেন, কোনও ফোন এসেছে কিনা। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সাহেব সিংহ বর্মার ছেলে প্রবেশ বলেন, ‘‘বাবা ও শ্বশুর দুজনেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন। দু’জনের কাছেই ফোন এসেছিল গভীর রাতে। রাজনীতিকরা আশায় বাঁচে।’’ নবীন জাঠ সাংসদটির আশা, হয়তো বেশি রাতে একটা ফোন আসবে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement