অমিত ভোট চান কর্মীদের দানে!

গত দু’বছর উতরে দিয়েছেন শিল্পপতিরা। গত বছরে অনুদান এসেছিল ৪৩৭ কোটি। তার আগের বছরে ৫৩২ কোটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

গত দু’বছর উতরে দিয়েছেন শিল্পপতিরা। গত বছরে অনুদান এসেছিল ৪৩৭ কোটি। তার আগের বছরে ৫৩২ কোটি। রাজনৈতিক দলগুলির জন্য শিল্পপতিদের অনুদানের সিংহভাগই গিয়েছিল বিজেপির ঝুলিতে। কিন্তু ভোট বছরে দ্বিধায় শিল্পপতিরাও। বিজেপির সঙ্গে ভাল রকম টক্কর দিচ্ছে কংগ্রেস ও বিরোধী মহাজোট। জিতবে কে, সেই ছবিটা স্পষ্ট নয় কারও কাছে। ফলে বিজেপির ভাগে কমেছে অর্থ সাহায্য। এই পরিস্থিতিতে ভোটের মুখে দলের সাধারণ কর্মীদের কাছে হাত পাতার কৌশল নিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, আদৌ টাকার অভাব নেই বিজেপির। এ আসলে ভোটের মুখে ভাবমর্তি উদ্ধার ও বুথে-বুথে কর্মীদের চাঙ্গা করার ছক।

Advertisement

দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকী অনুষ্ঠানে অমিত আজ ঘোষণা করেছেন, ‘‘শিল্পপতি, প্রোমোটার বা ঠিকাদারদের টাকায় নয়, দল ভোটে লড়বে সাধারণ কর্মীদের সাহায্যে।’’ বুথ পিছু তোলা হবে হাজার টাকা। জমা নেওয়া হবে নমো অ্যাপের মাধ্যমে। যা জোগাবেন প্রতি বুথের দু’জন দলীয় কর্মী। অমিতের কথায়, ‘‘বিজেপি কর্মীরা বুক ঠুকে বলতে পারবেন, আমাদের দল চলে কর্মীদের টাকায়। কোনও শিল্পপতি বা ঠিকাদার চালায় না।’’ পরে কর্মীদের উৎসাহ দিতে নমো অ্যাপের মাধ্যমে দলের তহবিলে ১ হাজার টাকা করে চাঁদা দেন অমিত, নরেন্দ্র মোদী ও পীযূষ গয়ালরা।

বিজেপি সভাপতি শিল্পপতিদের দূরে রাখার দাবি করলেও, হিসেব বলছে অন্য কথা। নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস’-এর তথ্য বলছে, গত দু’বছরে প্রায় হাজার কোটি টাকা স্রেফ চাঁদা হিসেবে জমা পড়েছে বিজেপির কোষাগারে। যার ৯০-৯২ শতাংশই দিয়েছে শিল্পপতি বা কর্পোরটে সংস্থা।

Advertisement

একই বক্তৃতায় অমিত পরে এটাও স্বীকার করে নেন যে, ‘‘এই মুহূর্তে শুধু কর্মীদের টাকা দিয়ে নির্বাচন করা বা দল চালানো সম্ভব নয়। তবে মনে রাখতে হবে, পাথেয় শুদ্ধ না হলে লক্ষ্যে পৌঁছনো অসম্ভব।’’

তৃণমূল-সহ একাধিক দল দীর্ঘদিন ধরেই চাইছে, ভোট হোক সরকারি খরচে। মোদী সরকার সে পথে হাঁটেনি। তবে নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার কমাতে দু’হাজার টাকার বেশি দানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এতে আখেরে সুবিধে হয়েছে বিজেপিরই। ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত চার বছরে বিজেপি বেসরকারি সংস্থা থেকে যে পরিমাণ অর্থ সাহায্য পেয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বহু বার। বিরোধীদের মতে, ক্ষমতায় থাকার সুবাদে বেসরকারি অনুদানের অধিকাংশ গিয়েছে বিজেপির কোষাগারে। ভোটের মুখে ফের এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। সেই ভয়েই ভাবমূর্তি সাফ করতে নেমেছে বিজেপি। দলের কর্মীদের কাছ থেকে সামান্য দানের কথা বলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন