জমি বিলই যে এই মুহূর্তে বিজেপির গলার কাঁটা তা আজ আবার প্রমাণ করলেন দলীয় নেতৃত্ব। এতদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই বিষয়টি নিয়ে সাধারণের কাছে যাচ্ছিলেন। আজ দল সভাপতি অমিত শাহও আসরে নামলেন। পটনার গাঁধী ময়দানে দলের তৃণমূল স্তরের নেতাদের এক সভায় জমি বিল নিয়ে বিশেষ বার্তা দিলেন অমিত। এবং দলকে নির্দেশ দিলেন, গ্রামে গ্রামে এই বার্তা প্রচার করুন। চাষীদের বলুন, জমি অধিগ্রহণ করে নেওয়া এক ইঞ্চি জমিও শিল্পপতিদের দেওয়া হবে না। গ্রামের রাস্তা, পানীয় জল, নিকাশি ইত্যাদি কাজের জন্য যেটুকু জমির প্রয়োজন তাই গ্রামবাসীদের কাছ থেকে নেওয়া হবে।
জমি বিলকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই সংসদের ভিতরে বাইরে বিরোধীরা একজোট। আর মাস ছয়েকের মধ্যে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে লালু-নীতীশ জোট যে জমি বিলকেই প্রচারের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার করবে সেটাও এখনই স্পষ্ট। কৃষি-প্রধান বিহার বিজেপির, বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদীর রাজনৈতিক মানচিত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। মোদী-নীতীশ দ্বন্দ্ব-যুদ্ধ। এই যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে নীতীশ তাঁর এক সময়কার প্রধান প্রতিপক্ষ লালুপ্রসাদের সঙ্গেও হাতে হাত মিলিয়েছেন। এই অবস্থায় লালু-নীতীশ জমি বিলকে ঘিরে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘কৃষক-বিরোধী’ তকমা সাঁটতে উঠেপড়ে লেগেছেন। পরিস্থিতি বুঝেই অমিত শাহরা ‘কৃষক বন্ধু’ হতে মরিয়া। আজ পটনার গাঁধী ময়দানে বি আর অম্বেদকরের ১২৫তম জন্ম দিবসকে বেছে নিলেন অমিত শাহ। এই সভাকে কার্যত প্রাক্-নির্বাচনী প্রচার সভা ধরে নিয়েই তিনি দলের বুথস্তরের কার্যকর্তাদের জানালেন, কৃষকদের কাছে গিয়ে তাঁদের সার সত্য বোঝাতে হবে। বোঝাতে হবে, জমি বিল উন্নয়নের স্বার্থে, শিল্পপতিদের স্বার্থে নয়।
এ ছাড়াও, রাজ্য নেতারা তো বটেই, সভায় উপস্থিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহও বিহারে জঙ্গলরাজের প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করেন। লালুর সঙ্গে নীতীশের জোটে যাওয়ার পরিণাম যে জঙ্গলরাজেরই প্রত্যাবর্তন তাও স্মরণ করিয়ে দেন। এবং এর জন্য তাঁরা নীতীশকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করান।