Jyotiraditya Scindia

আড়াল থেকে চাল শাহেরই, খেলা বিজেপির অন্দরেও

প্রথম বার বিজেপিতে যোগ দিয়ে সিন্ধিয়া যত বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম নিলেন, তত বার এল অমিত শাহের নামও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২০ ০৪:৩৯
Share:

নতুন ইনিংস: বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে জে পি নড্ডার সঙ্গে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। বুধবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে। পিটিআই

বিজেপির জাতীয় সভাপতি... বলতে গিয়ে অমিত শাহের নামটিই মুখ থেকে বেরিয়ে পড়ছিল জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার। বাক্য শুধরে নিয়ে বললেন জগৎপ্রকাশ নড্ডার নাম। নড্ডা তখন তাঁর পাশেই বসে। বিজেপির ঝাঁ চকচকে সদর দফতরে নড্ডাই সিন্ধিয়াকে দলের আনুষ্ঠানিক সদস্য করলেন।

Advertisement

প্রথম বার বিজেপিতে যোগ দিয়ে সিন্ধিয়া যত বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম নিলেন, তত বার এল অমিত শাহের নামও। অথচ আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে শাহের পরিচয় তো শুধুমাত্র দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও বিজেপির নেতারা বলছেন, ‘‘সভাপতির পদে না-থাকুন, মোদীর পরে ক্ষমতা এখনও শাহেরই হাতে। ঝাড়খণ্ড, দিল্লিতে বিজেপির হার। মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে চেয়েও পারেননি। এ বারে মধ্যপ্রদেশে ঝাঁপালেন শাহ।’’ কানে ‘এয়ারপডস’ গুঁজে নিজের ল্যান্ড রোভার চালিয়ে গত কাল কোথায় গিয়েছিলেন সিন্ধিয়া? প্রশ্নটি করে বিজেপি নেতারাই বলছেন, ‘‘গুজরাত ভবন। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন শাহ। সিন্ধিয়াকে দলে আনার ঘুঁটি তিনিই সাজিয়েছেন। সঙ্গে নিয়েছিলেন চার নেতাকে। শিবরাজ সিংহ চৌহান, নরেন্দ্র সিংহ তোমর, জফর ইসলাম ও ধর্মেন্দ্র প্রধান। সিন্ধিয়ার সঙ্গে দর কষাকষির কাজ করেন প্রধান, তোমর দেখছিলেন মধ্যপ্রদেশের বিধায়ক সংখ্যা, শিবরাজ তাঁর ক্যারিশমা দিয়ে হাওয়া তৈরি করছিলেন, আর তুলনায় অচেনা নাম, বিজেপির মুখপাত্র জফর করছিলেন বার্তা পৌঁছনোর কাজ। আজও সিন্ধিয়াকে বিজেপি দফতরে আনতে জফরই গিয়েছিলেন তাঁর বাড়িতে।’’ বিজেপি জানাচ্ছে, সব চূড়ান্ত হওয়ার পরেই শাহ কাল নিজের গাড়িতেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যান সিন্ধিয়াকে। বৈঠকের পরে আবার গুজরাত ভবনে সিন্ধিয়াকে ছেড়ে যান। যেখানে তাঁর গাড়ি ছিল। সব হয়ে যাওয়ার পর আজ হল নড্ডার উপস্থিতিতে সিন্ধিয়ার বিজেপিতে যোগদান।

বিজেপি সূত্র বলছে, জ্যোতিরাদিত্যকে দলে আনার পিছনে আরও পরিকল্পনা আছে শাহের। সেটি কী? এক, দলে সিন্ধিয়া পরিবারের অন্য দুই সদস্যকে কোণঠাসা করা। দুই, শিবরাজকে চাপে রাখা। দলের এক শীর্ষ নেতার ব্যাখ্যা, কংগ্রেসকে দুর্বল করতে রাহুল গাঁধীর শিবির থেকে সিন্ধিয়াকে ছিনিয়ে আনাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কিন্তু তার থেকেও বড় কৌশল, বিজেপির ভিতরে অন্তর্দ্বন্দ্বকে উস্কে দেওয়া। জ্যোতিরাদিত্যের ছবি দিয়ে তাঁর পিসি তথা রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া আজ তাঁকে বিজেপি পরিবারে স্বাগত জানিয়েছেন। আর এক পিসি যশোধরা তো শিবরাজের পাশে বসে কাল থেকেই স্বাগত জানাচ্ছেন ভাইপোকে। কিন্তু বিজেপি সূত্রের খবর, এই দুই নেত্রীর কারও সঙ্গেই সুসম্পর্ক নেই শাহের। বিশেষ করে বসুন্ধরার সঙ্গে। সিন্ধিয়া পরিবারের জ্যোতিরাদিত্যকে এনে তাঁদের কোণঠাসা করা হবে।

Advertisement

একই সঙ্গে জ্যোতিরাদিত্যকে সামনে রেখে চাপ বাড়ানো হবে শিবরাজের উপরেও। ইতিমধ্যেই ভোপালে বিজেপি দফতরে দলের নেতা নরোত্তম মিশ্রকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি উঠছে। দাবিদার তোমরও। চাপে শিবরাজ। সকাল-সকাল টুইট করেছেন, ‘‘আমার প্রিয় ভাই-বোন, ভাগ্নে-ভাগ্নিরা, দিন শুভ হোক।’’

‘মামা’ পরিচিতিটা নতুন করে ঝালিয়ে নিচ্ছেন শিবরাজ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন