অমিতের মুখে ফের হিন্দুত্ব, প্রশ্ন বিজেপিতেই

বিহার নির্বাচনের আগে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের মুখে আবার হিন্দুত্বের সুর। আর তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল তাঁর দলের মধ্যেই। গতকাল গুজরাতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বলেছিলেন, হিন্দু ধর্মই পৃথিবীর সব সমস্যার সমাধান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৫ ২০:৫১
Share:

বিহার নির্বাচনের আগে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের মুখে আবার হিন্দুত্বের সুর। আর তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল তাঁর দলের মধ্যেই।

Advertisement

গতকাল গুজরাতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বলেছিলেন, হিন্দু ধর্মই পৃথিবীর সব সমস্যার সমাধান। সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলার সময় আদালতের নির্দেশে যে দু’বছর তাঁকে গুজরাতের বাইরে থাকতে হয়েছিল, সে সময়কার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অমিত শাহ বলেন, সেই ‘কঠিন’ সময়ে ভারতের সব ধার্মিক কেন্দ্র তিনি ঘুরে দেখেছেন। ভারতের সব জ্যোতির্লিঙ্গ ও শক্তিপীঠের আশীর্বাদও চেয়েছেন।

স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি সভাপতির মুখ থেকে ফের হিন্দুত্বের সুর শুনে বিরোধীরা আসরে নেমে পড়েছে। কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘হিন্দু ধর্ম সব সমস্যার সমাধান, তা নিয়ে আমাদের কোনও বিরোধিতা নেই। কিন্তু বেছে বেছে বিজেপি নেতারা শুধু কেন হিন্দু ধর্মেই সব কিছু দেখতে পান? অন্য ধর্মে কেন কিছু নজর আসে না? এটা আসলে বিজেপি-র মেরুকরণের রাজনীতি।’’ কিন্তু বিহার নির্বাচনের আগে ফের খোদ বিজেপি সভাপতির মুখে হিন্দুত্ব দেখে অসন্তুষ্ট তাঁর দলের নেতারাই। বিশেষ করে বিহারের নেতারা বলছেন, এর খেসারত দিতে হতে পারে রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে।

Advertisement

বিহার বিজেপি-র এক নেতা আজ বলেন, উত্তরপ্রদেশ ও বিহার, দুটিই গোবলয়ের মধ্যে গণ্য হলেও দুই রাজ্যের রাজনীতির অঙ্ক কিন্তু ভিন্ন। লোকসভা নির্বাচনে মেরুকরণের রাজনীতি করে অমিত শাহ সাফল্য অর্জন করতে পারেন। কিন্তু তার পর সেই রসায়ন রূপায়ণ করতে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছেন দিল্লিতে। বিহারে জাতপাতের রাজনীতি চলতে পারে, কিন্তু মেরুকরণ সে ভাবে ধোপে টিকবে না। আবার দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিহার বিধানসভাতে লোকসভার সময় দলের কৌশল ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। যাবতীয় জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠে নরেন্দ্র মোদীকেই মুখ করে এগোতে চাইছেন। কিন্তু লালু-নীতীশ-কংগ্রেস এক হয়ে যে ভাবে জাতপাতের রাজনীতি নিয়ে কোমর বেধে ময়দানে নেমে পড়েছে, তাতে জাতের রাজনীতিকেও কোনও ভাবে উপেক্ষা করতে পারছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি-র একাংশের কথায়, যখন দলের নেতারাই এখন নিশ্চিত নন, কোন কৌশল নিয়ে এগোনো হবে, তখন অযথা মেরুকরণের রাজনীতিকে উস্কে দিয়ে কী লাভ?

প্রকাশ্যে অবশ্য বিজেপি দলের ভিতরের অসন্তোষকে তেমন আমল দিতে চাইছে না। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘দলের সভাপতি কোনও ভাবেই মেরুকরণের রাজনীতি করছেন না। তিনি নিজেই বলেছেন, হিন্দু হিসেবে জন্ম নিয়েছেন বলে এই কথা তিনি বলেননি। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালামের বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি হিন্দু ধর্মের বিষয়ে তাঁর উপলব্ধির কথা বলেছেন মাত্র। তার মানে এই নয় অন্য ধর্মকে তিনি উপেক্ষা করেছেন। কংগ্রেস বরাবর ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করে এসেছে। এখনও করে চলেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন