আহত সেই ব্যক্তি। হাসপাতালে।
গুরুতর জখম এক ব্যক্তির পা কেটে বাদ দেওয়ার পর সেই কাটা পা-কেই তাঁর মাথার বালিশ হিসাবে ব্যবহার করল সরকারি এক সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল!
এমনই অভিযোগ উঠেছে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে।
শনিবার একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন বছর পঁচিশের ঘনশ্যাম। তিনি স্কুলপড়ুয়াদের বাসে হেল্পার হিসাবে কাজ করতেন। ওই দিন সকালে একটি ট্র্যাক্টরকে বাঁচাতে গিয়ে বাসটি উল্টে যায়। দুর্ঘটনায় ২৫ জন পড়ুয়া আহত হন। গুরুতর জখম অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে ঝাঁসি মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় ঘনশ্যামকে।
আরও পড়ুন: চেনা যাবে তো দাউদকে! সংশয়ে গোয়েন্দারাই
তাঁর বাঁ পা-টি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চিকিত্সকরা তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচার করে পা বাদ দিয়ে দেন। এই পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় রোগীর মাথার বালিশ নিয়ে। হাতের কাছে বালিশ না থাকায় ঘনশ্যামের কাটা পা-কেই তাঁর মাথার নীচে বালিশ হিসাবে গুঁজে দেন চিকিত্সকরা!
ঘনশ্যামের দুর্ঘটনার খবর প্রথমে পান তাঁর এক আত্মীয় জানকী প্রসাদ। তিনি জানান, হাসপাতালে গিয়ে তাঁর ভয়ানক অভিজ্ঞতা হয়। তিনি গিয়ে দেখেন হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন ঘনশ্যাম। কাছে যেতেই আঁতকে ওঠেন। ঘনশ্যামের মাথার নীচে কোনও বালিশ ছিল না। পরিবর্তে তাঁর কাটা পা-কেই বালিশ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে!
আরও পড়ুন: চড়িলাম কেন্দ্র ছাড়লাম: বিজন
জানকী প্রসাদ আরও জানান, এই অবস্থা দেখে তিনি কর্তব্যরত চিকিত্সকের কাছে বিষয়টি জানিয়ে বালিশের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানান। তাঁর অভিযোগ, কোনও ভাবেই সাহায্য করতে চাননি তিনি। প্রায় দু’ঘণ্টা এমন ভাবে পড়ে থাকেন ঘনশ্যাম। অগত্যা জানকী প্রসাদ দোকান থেকে একটা বালিশ কিনে আনেন। তার পরই ঘনশ্যামের কাটা পা সরিয়ে নেওয়া হয়।
একটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এমন ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। রাজ্য সরকার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে, এই ঘটনায় যাঁরা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালের প্রিন্সিপাল সাধনা কৌশিক বলেন, “আমরা একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কোনও কর্মীর বিরুদ্ধে গাফিলতি প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উত্তরপ্রদেশের চিকিত্সা শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী আশুতোষ টন্ডন ইমারজেন্সি মেডিক্যাল অফিসার চিকিত্সক মহেন্দ্র পাল সিংহ, সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিত্সক অলোক অগ্রবালকে সাসপেন্ডের নির্দেশ দেন। ঘটনার সময় কর্তব্যরত নার্স দীপা নারাং এবং শশী শ্রীবাস্তবকে সাসপেন্ড করা হয়।