ভুয়ো আপত্তির জেরে হেনস্থা, ধর্না দিল্লিতে

আমসুর সভাপতি রেজাউল করিম সরকারের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট এসওপির ৩.২ উপদফায় বলেছিল, কোনও ব্যক্তি কারও নামে মিথ্যে অভিযোগ আনলে নাগরিকত্ব আইনের ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী তার পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৯ ০১:২১
Share:

এনআরসির খসড়ায় নাম ওঠার পরেও নাগরিকত্ব নিয়ে ভিত্তিহীন ও বেনামি অভিযোগের দৌরাত্ম্যে নাজেহাল হচ্ছেন প্রকৃত ভারতীয়েরা। বিশেষ ভাবে নিশানা করা হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাল আমসু। আজ সাংবাদিক বৈঠক করে আমসু অভিযোগ করে, দাবি-আপত্তি আবেদন নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিত পদ্ধতিতে হচ্ছে না। ফলে সাধারণ মানুষ হয়রান হচ্ছেন।

Advertisement

আমসুর সভাপতি রেজাউল করিম সরকারের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট এসওপির ৩.২ উপদফায় বলেছিল, কোনও ব্যক্তি কারও নামে মিথ্যে অভিযোগ আনলে নাগরিকত্ব আইনের ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী তার পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ভুয়ো আপত্তি যারা জানাচ্ছে, তাদের রক্ষা করা হচ্ছে। এসওপির পাঁচ নম্বর ধারা অনুযায়ী আপত্তির কারণ উল্লেখ করে আপত্তিকারীদেরও নোটিস পাঠানোর কথা। এনআরসি কর্তৃপক্ষ নোটিসের আপত্তির কারণ ও আবেদনকারীর নাম-ঠিকানা উল্লেখ করছে না। আমসুর মতে, আড়াই লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে আপত্তি জমা পড়েছে জানা গেলেও প্রতি দিন যে হারে নোটিস পাঠানো ও শুনানি চলছে তাতে মনে হচ্ছে আসলে আপত্তির সংখ্যা বিশ লক্ষের বেশি।

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, শুনানির অন্তত ১৫ দিন আগে নোটিস পাঠাতে হবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ২-৩ দিন আগে নোটিস ধরানো হচ্ছে। কোন কারণে আপত্তি— তা-ও নোটিসে বলা থাকছে না। আপত্তিকারীর নাম-ঠিকানা অভিযোগে উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। তা-ও মানা হচ্ছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আপত্তিকারী শুনানিতে আসছে না। এই সমস্যার কথা এনআরসি সমন্বয়কারী আধিকারিক প্রতীক হাজেলা সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন। আদালত এ নিয়ে তাঁকে বিবেক ও আইন মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া অধিকার দিয়েছে।

Advertisement

রেজাউলের অভিযোগ, আপত্তিকারী হাজির না হলে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ পাঠিয়েছেন হাজেলা। কিন্তু আপত্তিকারী হাজির না-হলেও এনআরসি কেন্দ্রের কর্মীরা অবান্তর প্রশ্নবাণে শুনানিতে আসা সাধারণ মানুষকে জর্জরিত করছেন। শুনানির সিদ্ধান্তও গোপন রাখা হচ্ছে। আমসুর দাবি, আপত্তিকারী না-এলে তার গরহাজির থাকা ও সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি খারিজ করে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি লিখিত ভাবে দেওয়া উচিত। ভুয়ো আপত্তিকারীর পরিচয় জানার অধিকারও হেনস্থা হওয়া ব্যক্তির থাকা উচিত। আমসুর উপদেষ্টা আজিজুর রহমানের মতে, সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল গোটা প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে। কিন্তু ভুয়ো আপত্তিকারীদের রক্ষণাবেক্ষণ দেওয়া ও শুনানির সিদ্ধান্ত গোপন রাখায় স্বচ্ছতা নষ্ট হয়ে আশঙ্কা বাড়ছে। এর প্রতিবাদে ২১ মে দিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্নার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি, আরজিআই ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে বিষয়গুলি জানিয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন