প্রতীকী ছবি।
‘‘আমি শিখেছি, আঙুল খায় না। তোয়ালে খেতে নেই। অথচ আঙুল খেতে মন্দ লাগে না। তোয়ালে তো বেশ সুস্বাদু, নোনতা–নোনতা।’’
মেয়ে কাহনের জন্মের কিছুদিন পর থেকেই তার নামে ফেসবুক প্রোফাইল খুলে কাল্পনিক রোজনামচা লিখছিলেন বাবা প্রিয়ম সেনগুপ্ত। সেই লেখা দেখে একটি ওয়েবসাইট যোগাযোগ করে প্রস্তাব দেয়, তাদের ব্লগে ওই লেখা প্রকাশ করার। এখন বয়স কয়েক মাস গড়াতে না গড়াতেই রীতিমতো ‘রোজগার’ করছে কাহন!
নেট দুনিয়ায় এখন রোজগারের জন্য নির্দিষ্ট চাকরির প্রয়োজন নেই। দরকার শুধু নিজের সৃজনশীলতা। ফেসবুকে অভিনব ‘কনটেন্ট’ দেখেই তাঁরা আগ্রহী হন বলে জানালেন গুরুগ্রামের ওয়েবসাইটের বাংলা ব্লগের দায়িত্বে থাকা বেদপ্রাণা পুরকায়স্থ। তাঁর কথায়, ‘‘কাহনের প্রথম ব্লগ ২৪ ঘণ্টাতেই পড়ে নেন হাজার দশেক পাঠক।’’
প্রিয়ম অবশ্য এত ভেবে লেখা শুরু করেননি। তিনি বললেন, ‘‘আমি ডায়েরির মতো লিখতে চেয়েছিলাম, যেখানে মেয়ের বড় হওয়ার গল্পগুলো থাকবে। যেগুলো ও বড় হয়ে পড়বে।’’ এ ভাবেই বছর দুয়েক আগে খবরে আসেন ক্যালিফোর্নিয়ার মার্ক ও রেয়া। তাঁদের ইউটিউব চ্যানেলে তিন ছেলেমেয়ের খেলার ভিডিও এতটাই জনপ্রিয় হয় যে, সেগুলি তৈরি করতে ওই দম্পতি চাকরি অবধি ছেড়ে দেন। বিজ্ঞাপন থেকে তাঁদের আয় ছাড়ায় বছরে ১০ লক্ষ ডলারেরও বেশি।
এ দেশেও এখন ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল— নানা বিষয়ের কনটেন্ট তৈরি করে আপলোড করছেন অনেকেই। অন্ধ্রপ্রদেশের অজ গাঁয়ের ১০৬ বছরের বৃদ্ধা মতসানাম্মার রান্নার ভিডিও ইউটিউবে দিয়েছিলেন তাঁর নাতির ছেলে কে লক্ষ্মণ। তা এতটাই জনপ্রিয় হয় যে লক্ষ্মণ ও তাঁর বন্ধু শ্রীনাথ আস্ত চ্যানেলই খুলে ফেলেন। সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়েছে। কলকাতার বাসিন্দা, ম্যানেজমেন্ট কর্মী তন্ময় মুখোপাধ্যায়ও বছরখানেকের ছেলে কবীরকে নিয়ে ‘বালিশবাবুর অফিসে’ নামে ব্লগ লেখেন। তন্ময় বলছেন, ‘‘ইন্টারনেট মানুষকে অনেক স্বনির্ভর করে। সবাই সেই সুযোগ নিচ্ছেন।’’