আগামী কাল নতুন জেলা হিসেবে যাত্রা শুরু মাজুলির। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের নিজের কেন্দ্র মাজুলিতে সেই উপলক্ষে বসতে চলেছে মন্ত্রিসভার পূর্ণাঙ্গ বৈঠক। আর তাকে ঘিরেই উৎসবের আবহ মাজুলিতে। বন্যা, ভূমিক্ষয় ইত্যাদিকে ঘিরে গড়ে ওঠা ক্ষোভকে দূরে সরিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম নদী-দ্বীপটির এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত আজ শুধু পতাকা, বেলুন, পোস্টার, ফেস্টুন। আগামী কাল থেকে আর যোরহাটের অংশ থাকবে না মাজুলি দ্বীপ।
সদ্য গিনেস বুকে বিশ্বের বৃহত্তম মনুষ্যবসতি থাকা নদী-দ্বীপের সম্মান ফিরে পেয়েছে মাজুলি। তা নিয়ে উৎসবের আবহ ছিলই। তার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ৮ সেপ্টেম্বর, ভূপেন হাজরিকার জন্মদিনে স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে কাজ শুরু করবে মাজুলি। তাতে নদী-দ্বীপের আনন্দ দ্বিগুণ।
আজ তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে মাজুলিতে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তারাও। গানে-বাজনায় তাঁদের স্বাগত জানানো হয়। কমলাবাড়ি ঘাট থেকে তিনি সোজা গড়মূড়ে যান। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘এ বার থেকে মাজুলিই অসমের প্রাণকেন্দ্র হবে। মাজুলির সম্মান, রাজ্যের সম্মান। মাজুলির সংরক্ষণ ও ঐতিহ্য রক্ষায় বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার। বিশ্বের দরবারে মাজুলির সত্রীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হবে।’’ পরে মাজুলি মহকুমাধিপতির দফতরে আমলাদের নিয়ে বৈঠক করেন সোনোয়াল। তিনি জানান, মাজুলিতে জলসম্পদ বিভাগের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। তৈরি হবে সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসালয়। বছরের অন্যান্য সময় রাজ্যের অন্য পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলিতেও মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।
গড়মূড়ের এসডিও দফতরকে নতুন করে সাজিয়ে জেলাশাসকের দফতর তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু জৌলুসের আড়ালে বন্যা ও ভূমিক্ষয়ে গৃহহারা অনেক পরিবার এখনও বাঁধের উপরে অস্থায়ী শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের কাছে নতুন জেলা নতুন আশা বয়ে এনেছে। তাঁদের দাবি, নতুন জেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে আগে বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পরিষেবার আলো পৌঁছে দিতে হবে। সেই সঙ্গে মূল ভূখণ্ড ও মাজুলির মধ্যে সেতুর দাবিও দীর্ঘদিনের।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মাজুলির বন্যা সমস্যা মেটাতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। বিশ্বব্যাঙ্ক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের (এডিবি) অর্থ সাহায্যে ব্রহ্মপুত্রে ড্রেজিং শুরু হবে। ড্রেজিং হলে ভূমিক্ষয় ও বন্যা কমবে।’’