চেঙ্গানুরে উদ্দারকাজ চালানো হচ্ছে। এপি-র ফাইল চিত্র।
বন্যার জল নামছে ঠিকই। তবে কেরল পুনর্গঠনে আমিরশাহির ৭০০ কোটির ত্রাণ ঘোষণা নিয়ে জলঘোলা তুঙ্গে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, বিদেশি রাষ্ট্রের অর্থসাহায্য নেবে না তারা। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, আমিরশাহির সঙ্গে তাঁদের যা সম্পর্ক, তাতে অন্য বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সে দেশের তুলনাই হয় না। এ দিকে, আজ সব বিতর্কে জল ঢেলে আমিরশাহি জানিয়েছে, সরকারি ভাবে কেরলের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ এখনও ঘোষণাই করেনি তারা। নির্ধারিত হয়নি টাকার পরিমাণ।
ভারতে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরশাহির রাষ্ট্রদূত আহমেদ আলবানা আজ স্পষ্ট জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগে কেরলকে সাহায্যের জন্য জাতীয় কমিটি গঠন করার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। ত্রাণ যাতে সঠিক হাতে যায় তার জন্য ভারতের বিদেশ মন্ত্রেকর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে সেই কমিটি। কিন্তু কেরলকে কত টাকা দেওয়া হবে তা কখনওই বলা হয়নি। আলবানার কথায়, ‘‘ত্রাণের টাকার অঙ্ক নিয়ে এখনও কোনও সরকারি ঘোষণা করা হয়নি। এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও হয়নি। ভাবনা-চিন্তা চলছে।’’
আরও পড়ুন: কেরলে বন্যায় বাড়িতেই ঢুকে আসছে বিষধর সব সাপ, দেখুন ভিডিয়ো
তাহলে কোথা থেকে এল ৭০০ কোটির ‘প্রতিশ্রুতি’? এত দিন ত্রাণ-প্রসঙ্গে কোণঠাসা বিজেপি এ বার সুযোগ বুঝে আক্রমণ করেছে বিজয়নকে। তাদের দাবি, কোন সূত্রে বিজয়ন এই সাহায্যের আশ্বাস পেয়েছেন, তা খোলসা করুন। আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে কেরল বিজেপির মুখপাত্র শ্রীধারণ পিল্লাই বলেছেন, ‘‘আমিরশাহির সাহায্য নিতে অস্বীকার করার পর কেন্দ্রকে যথেচ্ছ সমালোচনার করেছে রাজ্যের বাম সরকার। এ বার আমরাও জানতে চাই, বিজয়ন কোথা থেকে ৭০০ কোটির ‘প্রতিশ্রুতি’ পেলেন?’’
গত ১৮ অগস্ট সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রধানমন্ত্রী শেখ মহম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম প্রথম টুইট করে কেরলকে সাহায্যের জন্য কমিটি গঠনের কথা জানান। তার তিন দিনের মাথায় পিনারাই বিজয়ন টুইট করে জানিয়ে দেন, কেরলকে ৭০০ কোটি টাকা অর্থসাহায্য করবে আমিরশাহি। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টেলিফোনে কথাও হয় তাঁর।
আরও পড়ুন: ২৯শে চালু হবে কোচির বিমানবন্দর
যদিও বিদেশ মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, দেশের মান রাখতে সেই সাহায্য তারা নেবে না। জাতীয় প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা নীতি মেনেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানায় কেন্দ্র। আমিরশাহির ৭০০ কোটি টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার পর থেকে লাগাতার সমালোচনার মুখে কেরলের জন্য আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে ঘুরপথে ত্রাণ গ্রহণের একটি রাস্তাও খোলে মোদী সরকার।
এ দিকে, বন্যার কারণ নিয়ে কেরল ও তামিলনাড়ু সরকারের দড়ি টানাটানি চলছেই। গত কাল সুপ্রিম কোর্টে কেরল সরকার জানায়, তামিলনাড়ু মুল্লাপেরিয়ার বাঁধ থেকে হঠাৎ জল ছাড়ায় কেরলের বন্যা পরিস্থিতি ঘোরালো হয়েছে। আজ প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, মুল্লাপেরিয়ার বাঁধের জলস্তর ৩১ অগস্ট পর্যন্ত ১৪২ ফুটের বদলে ১৩৯ ফুট রাখতে হবে। আদালতের এই নির্দেশের পর তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামী বলেছেন, ‘‘মুল্লাপেরিয়ার বাঁধের জল শুধুমাত্র একটা এলাকা ভাসাতে পারে। বাকি রাজ্যে কী ভাবে বন্যা হল? কেরল সরকার উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভাবে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে।’’