স্বাগত সেনাপ্রধান (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জি-২০ সম্মেলনে চিন সফরে যাওয়ার সময়ই অরুণাচল সীমান্তের ও পারে আধুনিক ও ‘স্টিল্থ’ (রাডারে ধরা না পড়া) যুদ্ধবিমান চেংডাউ জে-২০ মোতায়েন করার ঘটনা জানাজানি হতে নড়েচড়ে বসেছে ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনী। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত কাল ও আজ তেজপুরে সীমান্ত সতর্কতা নিয়ে বৈঠক করলেন ভারতের সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ। সম্প্রতি অরুণাচলের পাসিঘাটে ‘অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ডে’ ভারত সুখোই ৩০ এমকেআই নামায়। সেই সঙ্গে বিশ্বের সব চেয়ে উন্নত ব্রাহ্মোস মিসাইলের একাধিক ইউনিটও চিন সীমান্তে মোতায়েন করেছে ভারত। এ নিয়ে ভারতকে সতর্ক করার পরই চিন অধিকৃত তিব্বত সীমান্তের ডাওচেং ইয়াডিং বিমানঘাঁটিতে দেখা যায় জি-২০ বিমান। সেটি ত্রিপলে ঢাকা ছিল। ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা ওই বিমানবন্দর বিশ্বের সব চেয়ে উঁচু অসমারিক বিমানবন্দর।
বিমানবাহিনীর বক্তব্য, এত উঁচুতে জে-২০ মোতায়েন করার অর্থ ওই বিমান সুউচ্চ এলাকায় ও বায়ুশূন্য আকাশেও ওঠানামা করতে সক্ষম। ভারতের হাতে এখনও কোনও ওই ধরনের যুদ্ধবিমান নেই। রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে এফজিএফএ বা পাক-এফএ তৈরির কাজ চলছে। প্রায় ৬ বছরের পরীক্ষানিরীক্ষার পরে দুই ইঞ্জিনের জে-২০ (২০১৬-১৭ মডেল) বিমান জানুয়ারি থেকে তৈরি শুরু করেছে চিন। যদিও পুরো প্রকল্প নিয়ে এখনও গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর তরফে অবশ্য জি-২০ বিমান প্রসঙ্গে এড়িয়ে বলা হয়, সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ গত কাল ও আজ গজরাজ কোরের সমরসজ্জা, পাল্টা আক্রমণের দ্রুততা (অপারেশনাল রেডিনেস) ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়গুলি খতিয়ে দেখেন। অরুণাচলের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও সমরসজ্জাও যাচাই করেন নেন সেনাপ্রধান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন গজরাজ কোরের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি আনবু। তিনি রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সুহাগকে বিভিন্ন তথ্য দেন। সন্ত্রাস দমনে গজরাজ কোরের ভূমিকায় সন্তোষপ্রকাশ করেন সুহাগ।
নিহত জঙ্গি। পুলিশের সঙ্গে সঙ্ঘর্ষে মারা গেল এনডিএফবি সংগঠনের এক জঙ্গি। রাজ্য পুলিশের এডিজি এল আর বিষ্ণোই জানান, চিরাং বাসুগাঁওয়ের মাইনাওপুর গ্রামে জঙ্গিরা ঘাঁটি গেড়েছে জানতে পেরে বিষ্ণোই, কচুগাঁওয়ের ওসি লাটুক দাসের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে হানা দেয়। জঙ্গলে প্রবল বৃষ্টিতে অভিযান চলছিল। পুলিশ দেখে জঙ্গিরা গুলি চালিয়ে পালাতে থাকে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। কিছুক্ষণ গুলিবিনিময় চলার পরে এক জঙ্গি পালায়, অন্য জন মারা যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এ কে ৮১ রাইফেল, ম্যাগাজিন, ১১টি তাজা গুলি, দু’টি গ্রেনেড ও ২১ হাজার টাকা উদ্ধার করে। নিহত জঙ্গির নাম আগুন বসুমাতারি। বিষ্ণোই জানান, আগুন এনডিএফবি প্রধান জি বিদাইয়ের ঘনিষ্ঠ। তার উপরে সংগঠনের রেশন ও অন্য নিত্যপণ্য আনার দায়িত্ব ছিল। মাঝেমধ্যেই সে ভুটান থেকে খাবার কিনতে আসত।
অন্য দিকে এ দিন ভোরে গুয়াহাটির শিলপুখুরি এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে পুলিশ এনএসসিএন খাপলাং বাহিনীর এক ক্যাপ্টেন ও তার সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে। ক্যাপ্টেনের নাম টি সুমি। তারা কী উদ্দেশে গুয়াহাটিতে ঘাঁটি গেড়েছিল তা জানতে চলছে জেরা।